ঢাকাবুধবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • অন্যান্য

বিশ্বে দুধের ব্যবহারে অদ্ভুত পার্থক্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫ ৫:৩০ অপরাহ্ণ । ৫১ জন

বিশ্বের প্রতিটি দেশের খাদ্যাভ্যাসে রয়েছে এক ধরনের অদ্ভুত বৈচিত্র্য, এবং এই বৈচিত্র্যটি সবচেয়ে স্পষ্টভাবে দেখা যায় দুধের ব্যবহার নিয়ে। কোনো দেশে দুধের প্রতি ভালোবাসা আকাশচুম্বী, আবার অন্য দেশে তা একেবারে নূন্যতম। ফিনল্যান্ডের মতো দেশ যেখানে প্রতি ব্যক্তি বছরে প্রায় ৪৩০ কিলোগ্রাম দুধ খায়, সেখানে বাংলাদেশ বা নাইজেরিয়ার মতো দেশে সেই পরিমাণ দুধ খাওয়া অনেকটাই অস্বাভাবিক। তবে, দুধের ব্যবহারে এই বৈচিত্র্যের পেছনে যে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং কৃষিকর্মের নানা কারণ কাজ করে, তা এক নজরে জানলে আপনি অবাক হবেন।

বিশ্বে দুধের ব্যবহারের পরিসংখ্যানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের খাদ্যাভ্যাস ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি কপিটা বার্ষিক দুধের ব্যবহার পর্যালোচনা করব।

ফিনল্যান্ডে দুধের বার্ষিক ব্যবহার সবচেয়ে বেশি, ৪৩০ কিলোগ্রাম প্রতি ব্যক্তি, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এই দেশটির দুধ খাওয়ার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে উচ্চতর এবং এর পিছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী ডেইরি কৃষির ঐতিহ্য। এর পরপরই রয়েছে নেদারল্যান্ডস ও সুইডেন, যেখানে প্রতি কপিটা দুধের ব্যবহার ৩৪১ কিলোগ্রাম। এই তিনটি দেশই ডেইরি উৎপাদন ও ব্যবহারকে কেন্দ্র করে একটি গভীর সাংস্কৃতিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত করেছে।

অন্যদিকে, অনেক উন্নত দেশ যেমন জার্মানি (২৫৮ কিলোগ্রাম), যুক্তরাষ্ট্র (২৫৪ কিলোগ্রাম), ইতালি (২৪৬ কিলোগ্রাম) এবং ফ্রান্স (২৪১ কিলোগ্রাম) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দুধ খায়। তবে, অস্ট্রেলিয়া (২৩৪ কিলোগ্রাম) ও যুক্তরাজ্য (২৩২ কিলোগ্রাম) কিছুটা কম দুধ ব্যবহার করে থাকে, তবে তাদের খাদ্যাভ্যাসে দুধের গুরুত্ব অপরিসীম।

এমনকি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, যেমন মেক্সিকো (১১১ কিলোগ্রাম), ভারত (৮৪ কিলোগ্রাম), জাপান (৭২ কিলোগ্রাম) এবং চীন (৩২ কিলোগ্রাম) দুধের ব্যবহার অনেক কম। দক্ষিণ কোরিয়া (২৯ কিলোগ্রাম), ইন্দোনেশিয়া (১৪ কিলোগ্রাম) ও নাইজেরিয়া (৮ কিলোগ্রাম) যেখানে দুধের ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে, তা আসলে বিভিন্ন দেশের খাদ্যাভ্যাস, ঐতিহ্য এবং দুধ উৎপাদন কাঠামোর সাথে সম্পর্কিত।

এই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে একটি বিষয় পরিষ্কার যে, দুধের ব্যবহারের পার্থক্য শুধু অর্থনৈতিক বা সাংস্কৃতিক নয়, বরং এটি ঐ দেশের কৃষি খাত এবং বাজারের অবস্থারও প্রতিফলন। অনেক উন্নত দেশে যেখানে দুধের চাহিদা বেশি, সেখানে তা স্থানীয় কৃষি এবং দুধ উৎপাদন ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে, কম দুধ খাওয়া দেশগুলোতে তা পুষ্টির বিকল্প উৎস থেকে পূর্ণ হয়।

এছাড়া, দুধের উপর মানুষের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এবং নানা রকম স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর কারণে ভবিষ্যতে এই পরিসংখ্যানের পরিবর্তন ঘটতে পারে। এ ধরনের প্রতিবেদন আমাদের খাদ্যাভ্যাস এবং জাতীয় পর্যায়ে দুধের গুরুত্বের প্রতি আরও সচেতন হতে সাহায্য করে, যা একটি দেশের কৃষি এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে।