বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস আজ। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দিবসটি আজ সারাদেশে পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য– ‘আসুন নিউমোনিয়া বন্ধ করার লড়াইয়ে সক্রিয় সহযোগী হই’। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দশ মাসে বাংলাদেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৪২৬ জন। গড়ে প্রতিদিন ৭০৯টি নতুন আক্রান্ত শিশু শনাক্ত হচ্ছে। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সচেতনতার ঘাটতির পাশাপাশি শীতকালের আগমনের ফলেও হতে পারে।
নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসে প্রদাহজনিত এক মারাত্মক রোগ, যা বিশেষত শীতকালে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা দেয়। চিকিৎসকদের মতে, অপুষ্টি, বায়ুদূষণ, টিকা না নেওয়া, এবং অ্যান্টিবায়োটিকের অভাব এই রোগের অন্যতম কারণ। যদিও অনেকেই টিকা গ্রহণ করেছেন, তবু ঝুঁকি থেকে যায়। স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া বা আরএসভি ভাইরাসের সংক্রমণ ফুসফুস ফুলিয়ে দেয় ও অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন– স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, হাত ধোয়া, সুষম খাবার খাওয়া, এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকার। হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা অত্যন্ত জরুরি। এ ছাড়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে রক্তে অক্সিজেনের অভাব (হাইপক্সেমিয়া) গুরুতর সমস্যা তৈরি করছে, যা কমানোর মাধ্যমে শিশু মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব। এজন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
নিউমোনিয়ার এই ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাই হতে পারে মৃত্যু হ্রাসের মূলমন্ত্র।