একের পর এক বোমা হামলার হুমকি এসেছে ভারতীয় বিমান পরিষেবায়। গত ৬ দিনে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোতে প্রায় ৭০টির মতো বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি পেয়েছে ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলো। এদিকে ধারাবাহিকভাবে এই বোমা হুমকির জেরে চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের বিমান পরিবহন খাত। এনডিটিভির প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ১১টি ফ্লাইটে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি এসেছে। এয়ারলাইন্সগুলোর পাওয়া এমন হুমকির তালিকা ক্রমশই দীর্ঘ হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, একের পর এক বোমার হুমকিতে ভারতীয় আকাশপথে নিরাপত্তা নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে যাত্রীদের মধ্যে। পাশাপাশি উদ্বিগ্ন এয়ারলাইন্সগুলো এমনকি দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ও। সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, পরিস্থিতি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০টি বিমান বোমা হুমকির ফোন পেয়েছে। ফলে বেশির ভাগ ফ্লাইটকে করতে হয়েছে জরুরি অবতরণ। যদিও কোনও ফ্লাইটে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। বারবার এমন বার্তায় বিমানসংস্থাগুলোর যেমন লোকসান হচ্ছে তেমন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।
পরিস্থিতি সামাল দিতে শনিবার ভারতের বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে দেশটির এভিয়েশন সেফটি সংস্থা ব্যুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি (বিসিএএস)। বৈঠকে ‘বোমা আতঙ্ক’ মোকাবিলায় এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলোকে এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধিমালা বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বোমা হুমকির এসব ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে সামাজিক মাধ্যম এক্স প্ল্যাটফর্মের দ্বারস্থ হয়েছে পুলিশ। কোন কোন অ্যাকাউন্ট থেকে বিস্ফোরণের ভুয়ো হুমকি দিয়ে পোস্ট করা হচ্ছে, তা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে এই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্ল্যাটফর্মের কাছে।
ইতোমধ্যেই তদন্তকারীরা একাধিক আইডি অ্যাড্রেসের সন্ধান পেয়েছে যেখান থেকে হুমকি বার্তাগুলো পাঠানো হচ্ছে। মূলত লন্ডন, আমেরিকা, ক্যানাডা এবং জার্মানি থেকে এই হুমকি এসে বলে জানা গেছে। ভিপিএন পরিষেবার মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে হুমকি বার্তা।
তবে বেসামরিক বিমাণ পরিবহনমন্ত্রী রামমোহন নাইডু এই ঘটনায় ‘ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব’ খারিজ করে দিয়েছেন। তার দাবি, ভুয়া হুমকি ফোনের বেশিরভাগই নাবালক নিছক মজার ছলে করছে। তবে মজার ছলে হলেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন এই মন্ত্রী।