ঢাকারবিবার , ৩০ জুলাই ২০২৩
  • অন্যান্য

মাংসের মূল্য হ্রাস করে ক্রয়সীমার মধ্যে আনার লক্ষ্যে অংশীজনের সঙ্গে কর্মশালা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ৩০, ২০২৩ ১১:০৯ অপরাহ্ণ । ১৮৪ জন

মাংসের মূল্য হ্রাস করে ভোক্তাদের ক্রয়সীমার মধ্যে আনয়নের লক্ষ্যে অংশীজনদের অংশগ্রহণে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৩০ জুলাই ২০২৩ সকাল ১০.০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব এ.এইচ. এম. সফিকুজ্জামান, মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস্ এসোসিয়েশন-এর সভাপতি জনাব মোঃ ইমরান হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জনাব মোঃ আনোয়ার হোসাইন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (কৃত্রিম প্রজনন অফিস), ঢাকা জনাব ডাঃ আনন্দ কুমার অধিকারী এবং সভাপতি হিসেবে ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক জনাব মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ, বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস্ এসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

কর্মশালার শুরুতেই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বর্ণিত কর্মশালার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ ও ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে অধিদপ্তর নিয়মিত বাজার অভিযান পরিচালনা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে নকল ও ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ভোক্তাবৃন্দ কোন পণ্য বা সেবা ক্রয় করে প্রতারিত হলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করে থাকেন। প্রায়শই ভোক্তারা গরুর মাংসের উচ্চ মূল্যের বিষয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারগণও গরুর মাংসের উচ্চ মূল্যের যৌক্তিকতা কতটুকু তা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানান।

পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে গরুর মাংসের মূল্য আমাদের দেশের তুলনায় কম। আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি গরু, ছাগল, হাস, মুরগি, ভেড়াসহ অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণী। গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকা শক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য সংশ্লিষ্ট এই খাতের কিছু টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করা অতিব জরুরী। সে প্রেক্ষিতে, অধিদপ্তর টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করে মাংসের মূল্য হ্রাস করে ভোক্তাবৃন্দের ক্রয়সীমার মধ্যে আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস্ এসোসিয়েশন এর সাথে আলোচনা করে। এই আলোচনার উদ্দেশ্য ফলপ্রসু করার লক্ষ্যেই আয়োজন করা হয়েছে আজকের এই কর্মশালা।

মূখ্য আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস্ এসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব মোঃ ইমরান হোসেন বলেন মাংস উৎপাদনের বাংলাদেশ সয়ংসম্পূর্ণ হলেও গত কয়েক বছর ধরে মাংসের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েছে। সুর্নিদিষ্ট কিছু বিষয়ে কাজ করা গেলে মাংসের দাম কমানো সম্ভব। মাংসের মূল্য হ্রাস করে ভোক্তাবৃন্দের ক্রয়সীমার মধ্যে আনয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস্ এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত সুপারিশসমূহ কর্মশালায় তুলে ধরা হয়:

  • জাত উন্নয়ন : বাংলাদেশে বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দেশীয় জাতের গরু কৃত্রিম প্রজননের জন্য ৪ ধরনের সিমেন প্রস্তুত করেন, যথা: আরসিসি/নর্থ বেঙ্গল গ্রে/শাহীওয়াল/ মুন্সিগঞ্জ। এই সকল জাতের গরু থেকে দুধ উৎপাদন করা সম্ভব নয় শুধুমাত্র মাংসের উৎপাদনের কাজে ব্যবহার এই জাতের একটা ২ বছরের গরু থেকে ১২০/১৫০ কেজি মাংস আহরণ করা সম্ভব অপর দিকে দেশিয় গরুর সাথে এই সকল জাত সংক্রায়ন না করে আমরা যদি ব্রাহমান এর মতো উন্নত জাতের সংকরায়ন করি তাহলে সমপরিমাণ শ্রম ও ব্যয়ের পরিবর্তে আমরা ২ বছরের একটা গরু থেকে ২৫০/৩০০ কেজি মাংস আহরণ করতে পারবো, এই একটা মাত্র পদক্ষেপই মাংসের উৎপাদন খরচের অনেক অংশ কমানো সম্ভব যা সরাসরি মাংসের মূল্য হ্রাসে সাহায্য করবে।

 

  • উন্নত জাতের ঘাস: এই মুহূর্তে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই দানাদার খাদ্যসহ অন্যান্য জিনিসের মুল্য অনেক বেশি, সুতারাং গরুকে এই উচ্চমূল্যের দানাদার খাবার এর পরিবর্তে উচ্চ প্রোটিন যুক্ত ও উচ্চ ফলনশীল সমৃদ্ধ ঘাস খাওয়াতে হবে, যেহেতু আমাদের দেশে ঘাস চাষের জমির সল্পতা আছে এমতাবস্থায় স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে গ্রামসহ সকল এলাকার অনাবাদি ঘাস জমি গুলো পতিত না রেখে ঘাস চাষের জন্য চাষীদের মধ্যে মৌখিক ভাবে লিজ প্রদান করতে হবে।

 

  • টেকনিক্যাল ট্রেনিং: বাংলাদেশের সকল প্রান্তেই নানা রকম ফসলের চাষ হয়, এই সকলে ফসলের উচ্ছৃষ্টাংশ যেমন ধানের খড়, ভূট্টা গাছের কান্ড, বিভিন্ন ডালের গাছ, কলাগাছসহ অন্যান্য সকল প্রকার ফসলের বাইপ্রোডাক্ট প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে খুব উচ্চমানের গো-খাদ্য তৈরী সম্ভব, দানাদার খাদ্যের পরিবর্তে চাষীরা কিভাবে এই খাবার খুব সামান্য মূল্যে প্রস্তুত করতে পারবে সেই ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে বিস্তর ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। একই সাথে বাংলাদেশে পশু ডাক্তারের সল্পতা রয়েছে অনেক যে কারনে চাষী/খামারিদের কে প্রাথমিক চিকিৎসা দেবার মতো দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য টেকনিক্যাল ট্রেনিং দরকার।

 

  • চামড়া শিল্প : লক্ষ্য করা যায় যে ২০১৫/১৬ সালের দিকে ১২০/১৫০ কেজি মাংস সম্পন্ন একটি গরুর চামড়া বিক্রয় মুল্য ছিলো ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা, যে মূল্যটা সরসরি মাংসের মূল্যের উপর প্রতি কেজিতে ৩০/৪০ টাকা হ্রাস করা সম্ভব হবে, বর্তমানে উপরিল্লিখিত সাইজের একটি গরুর চামড়ার বাজার মূল্য ৩০০/৪০০ টাকা, এমতাবস্থায় চামড়ার বাজার মূল্য পুনরুদ্ধার করে পূর্বের ন্যায় চামড়ার মূল্য ৪/৫ হাজার টাকায় বিক্রয় সম্ভব হলে মাংসের দাম প্রতি কেজিতে কমানো সম্ভব।

 

  • গো-হাটের খাজনা : লক্ষ্য করা যায় গ্রামের একজন প্রান্তিক কৃষক থেকে শহরের মাংস ব্যবসায়ীর হাতে একটা গরু এসে পৌছাতে ৩-৪ টি হাত পরিবর্তন করে তারপর পৌঁছায় এবং এই অনেকগুলো হাটে প্রবেশের জন্য একটা গরু প্রতি ৮০০০/১০,০০০ টা