ঢাকারবিবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অন্যান্য

মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় নিরপেক্ষ ও ভয়-ভীতি মুক্ত থেকে কাজ করে যাবো – স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪ ১০:০০ পূর্বাহ্ণ । ১১৪ জন

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি, শনিবার দুপুরে, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে কক্সবাজার জেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জেলা ও বিভাগীও পর্যায়ের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে একটি বিশেষ মতবিনিময় সভা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। সভায় কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ এবং জাতীয় সংসদ হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এর সচিব মোঃ আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ টিটো মিঞা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক সাহান আরা বানু সহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন মানুষের সেবা করার জন্য। আমি কোন রাজনৈতিক নেতা নই, আমি নির্বাচনও করিনি। মানুষের সেবায় আমি আমার কাজ নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতি মুক্ত থেকে করে যাবো।”

সভায় জেলার স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে নানা বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সকলকে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।

স্থানীয় কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল সভায় উপস্থিত থেকে কক্সবাজারে চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়োনে জেলাবাসীর দাবি উপস্থাপন করেন।

দুপুরে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ এর শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সাথে আরেকটি সভায় উপস্থিত হয়ে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মনোযোগের সাথে পড়াশোনা করার মাধ্যমে প্রথমত ভাল চিকিৎসক হতে হবে। এর সাথে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সৎ ও আদর্শিক মানসিকতা নিয়ে ডাক্তারি পেশায় নিজেকে নিযুক্ত করতে হবে। আমরা শুধু হাজার হাজার ডাক্তার চাই না, আমরা চাই ভালো ডাক্তার এই কথাটির অর্থ শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে।”

সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ কাজ অচিরেই শুরু করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী,২০২৪ খ্রি. পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা সফর করেন। সফরের প্রথম দিন ১৫ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গঠন ওজিএসবি এর ৫০তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) এবং ৩২তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন। সেখানে তিনি প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সহোযোগিতা চান এবং বলেন, “আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন, আমি চিকিৎসকদের জন্য যা করতে হয় তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলে সেভাবেই ব্যবস্থা নিব।”

সফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ ফেব্রুয়ারী সকালে চিকিৎসক অধ্যক্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করে দেশের সকল মেডিকেল কলেজ এর অধ্যক্ষদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন। মন্ত্রী তার বক্তব্যে চিকিৎসা শিক্ষার মান উন্নয়নে তার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

১৬ ফেব্রুয়ারী বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, কক্সবাজার শহরের হসপাতাল সড়কে অবস্থিত ইউনিয়ন হসপিটাল লি: এবং ২৫০ শয্যা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এ আকষ্মিক পরিদর্শন করেন। এসময় তার সাথে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডাঃ আবুল হোসেন মোঃ মঈনুল আহসান, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য চট্টগ্রাম) ডাঃ মোঃ মহিউদ্দিন, এবং সিভিল সার্জন কক্সবাজার ডাঃ বিপাশ খীসা উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শনকালে বেসরকারি হাসপাতালটির বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। হাসপাতালটি তার লাইসেন্স এর পরিধি বহির্ভূতভাবে আইসিইউ, সিটি স্ক্যান মেশিন, অপারেশন থিয়েটার ও পোস্ট অপারেটিভ রুম সমূহ পরিচালনা করে আসছিলো বিধায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসপাতালটির বর্ণিত অংশ সমূহ বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেন। সেই সাথে উক্ত অননুমোদিত আইসিইউ এবং পোস্ট অপারেটিভ রুমে ভর্তিকৃ্ত রোগীদের জরুরী ভিত্তিতে ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করার নির্দেশনা দেন।
পরবর্তীতে মন্ত্রী ২৫০ শয্যা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এর জরুরী বিভাগ, মহিলা মেডিসিন বিভাগ, সিসিইঊ, শেখ রাসেল নবজাতক সেবা ইউনিট (স্ক্যানু) তে রোগী ও দ্বায়িত্বরত চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেন এবং রোগীদের চিকিৎসার খোজখবর নেন। মন্ত্রী হাসপাতালেই সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য হাসপাতাল এর কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।

সফরের শেষ দিন গত ১৭ ফেব্রুয়ারী স্বাস্থ্যমন্ত্রী সকালে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি জরুরী বিভাগ, আউটডোর ও ইনডোর রোগীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। পরবর্তীতে তিনি উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর চিকিৎসকদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে আন্তরিকতার সাথে সেবা দেওয়ার উপর জোর আরোপ করেন।
এরপর মন্ত্রী রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসা ও পরিবার পরিকল্পনা সেবার চিত্র প্রত্যক্ষ করেন।