সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে মোটরযান গতিসীমা-সংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০২৪ সড়কে অকাল মৃত্যু কমাবে বলে মন্তব্য করেছেন রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ। বুধবার (১৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে এই প্রতিক্রিয়া জানায় কোয়ালিশন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, গত ৫ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ‘মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা, ২০২৪’ প্রণয়ন করেছে। জারি করা মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা রোডক্র্যাশ ও প্রতিরোধযোগ্য অকাল মৃত্যু ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে এই নির্দেশিকার যথাযথ বাস্তবায়ন ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও সেকেন্ড ডিকেইড অব অ্যাকশন ফর রোড সেফটি অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা অর্ধেকে কমিয়ে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, দেশের সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো। পাশাপাশি মোটরসাইকেলের অনিয়ন্ত্রিত গতি প্রতিনিয়ত দেশের কর্মক্ষম তরুণসহ অনেকের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। এমতাবস্থায়, রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সড়কে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি নির্দেশনার দাবি করে আসছিল। মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা জারি করায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, রোড সেফটি কোয়ালিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এই নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করা গেলে পরিবেশের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমে আসবে। প্রতিরোধযোগ্য রোড্যাশ এবং সড়কে অকাল মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। ব্যক্তি ও সরকারের চিকিৎসা ব্যয় হ্রাস পাবে তথা সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, এই নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করলে সড়কে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ঝুঁকিপূর্ণ পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
নিসচা চেয়ারম্যান ৩টি সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, এই নির্দেশিকা জারি করায় সরকারকে অভিনন্দন জানাই। পাশাপাশি এটি অবিলম্বে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিম্নলিখিত সুপারিশগুলোর ওপর দৃষ্টি আর্কষণ করছি।
১. অতিসত্তর ‘মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা, ২০২৪’ সংশ্লিষ্ট অধিদফতর, বিভাগে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো ও পদক্ষেপ গ্রহণে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া।
২. এই নির্দেশিকাতে যেসব বিষয় (যেমন: কীভাবে বিভিন্ন গতির মোরটযানগুলো ওভারটেক করবে; লেন পরবর্তন কীভাবে হবে; সড়কে কবে থেকে নির্দেশিকা কীভাবে, কখন ও কোথায় প্রয়োগ হবে) তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা প্রদান করা।
৩. নিয়মিতভাবে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে প্রতি মাসে একটি সমন্বয় সভার মাধ্যমে রোডক্র্যাশের সংখ্যা ও কারণ বিশ্লেষণ করে তথ্য প্রদান করতে হবে।
সংবাদ সন্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কোয়ালিশনের সদস্য ব্র্যাক, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ অর্থোপেডিক্স সোসাইটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা।