ঢাকামঙ্গলবার , ২৩ এপ্রিল ২০২৪

যত বাড়ল ট্রেনের ভাড়া !

নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ২৩, ২০২৪ ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ । ৯৪ জন

ট্রেনের যাত্রীদের ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব গেলে ভাড়ার ক্ষেত্রে ছাড় (রেয়াদ) দিতো বাংলাদেশ রেলওয়ে। ফলে যাত্রীরা কিছুটা কম ভাড়ায় ভ্রমণ করতে পারছিলেন আরামদায়ক এ বাহনে। এবার সেই সুবিধা বাতিল হচ্ছে। আগামী ৪ মে থেকে এ সুবিধা প্রত্যাহার করায় বাড়ছে সবধরনের ট্রেনের ভাড়া।

সোমবার (২২ এপ্রিল) বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাৎ আলী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

রেলওয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১০১ থেকে ২৫০ কিলোমিটার ভ্রমণে একজন যাত্রীর রেয়াত কর ২০ শতাংশ, ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ২৫ শতাংশ আর ৪০০ কিলোমিটার এর উপরে ৩০ শতাংশ। আগামী ৪ মে হতে যদি একজন যাত্রী ট্রেনে একশ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণ করে তাহলে তাকে ভাড়া বেশি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলের এই প্রস্তাবনা পাস করেছেন।

ঢাকা থেকে ১৫টি প্রধান রুটে ট্রেনের ভাড়া যতো বাড়ছে

সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৪ মে থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৩৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০৫ টাকা এবং এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) ভাড়া ৬৫৬ টাকা থেকে বেড়ে ৭৭১ টাকা হবে।

ঢাকা-খুলনা রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৬২৫ টাকা এবং এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৯৫৫ টাকা থেকে বেড়ে ১১৯৬ টাকা হবে।

ঢাকা-সিলেট রুটে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৩২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৭৫ টাকা এবং এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৬১০ টাকা থেকে বেড়ে ৭১৯ টাকা হবে।

ঢাকা-রংপুর রুটে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫০৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬৩৫ টাকা এবং এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৯৬৬ টাকা থেকে বেড়ে ১২১৪ টাকা হবে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ৩৪৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে ৪০৫ টাকা ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেনীর আসনের ভাড়া ৬৫৬ থেকে বেড়ে হবে ৭৭৭ টাকা।

ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ১৫০ ও ২৮৮ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ১৬০ ও ৩০৫ টাকা।

ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ৫০৫ ও ৯৬৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৩৫ ও ১২১৪ টাকা।

ঢাকা-চিলাহাটি রুটে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ৪৯৫ ও ৯৪৯ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬২০ ও ১১৮৫ টাকা।

ঢাকা-দেওয়াগঞ্জ রুটে তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ২২৫ ও ৪২৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৫০ ও ৪৭৬ টাকা।

ঢাকা-মোহনগঞ্জ রুটে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ২২০ ও ৪২৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৫০ ও ৪৭২ টাকা।

ঢাকা-ভূঞাপুর রুটে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ২৬০ ও ৪৯৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৯৫ ও ৫৭০ টাকা।

ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ৫১০ ও ৯৭২ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৪৫ ও ১২৩৭ টাকা।

ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া যথাক্রমে ৪৮০ ও ৯২০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬০০ ও ১১৫০ টাকা।

ঢাকা-চাপাইনবাবগঞ্জ রুটে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৪২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫১২ টাকা এবং এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৮১০ টাকা থেকে বেড়ে ৯৭৫ টাকা হবে।

ঢাকা-নোয়াখালী রুটে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ারের ভাড়া ২৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩১০ টাকা এবং এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫২৪ টাকা থেকে বেড়ে ৫৯৩ টাকা হবে। এছাড়া শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার বাদে সব আন্তঃনগর ট্রেনে ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে এসি সিট ও বার্থ এবং প্রথম শ্রেণির সিট ও বার্থ আসনের ভাড়াও আনুপাতিক হারে বেড়ে যাবে।

এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালে ভাড়া বাড়িয়েছিল রেলওয়ে। ২০১২ সালের অক্টোবরে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১১০ শতাংশ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরেক দফায় রেলের ভাড়া বাড়ানো হয় ৭ থেকে ৯ শতাংশ। এর প্রায় সাত বছর পর ২০২৩ সালের শেষার্ধে রেলওয়ের বিভিন্ন সেতু ও ভায়াডাক্টে পন্টেজ চার্জ আরোপের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আর রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধা চালু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এর মধ্যে সেকশনভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহার করা হয় ২০১২ সালে।