হামাস-ইসরায়েল সংঘাত চলছে টানা দুই মাস ধরে। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এ পরিস্থিতিতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উঠলেও তাতে ভেটো দিয়েছে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। খবর রয়টার্স। গতকাল শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি দুঃস্বপ্নের মতো। সেখানকার বাসিন্দারা কোথাও নিরাপদ নয়। এরপর নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরাত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করে। এ প্রস্তাবের সহ-পৃষ্ঠপোষক ছিল অন্তত ৯৭টি দেশ। প্রস্তাবটির পক্ষে ১৩টি দেশ ভোট দেয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
এর আগে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় সাতদিনের এক ‘মানবিক বিরতি চুক্তি’কে সমর্থন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময় হামাস উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জিম্মিকে মুক্তি দেয়। ইসরায়েলি কারাগার থেকেও মুক্ত হয়েছিল শতাধিক ফিলিস্তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই ‘যুদ্ধবিরতি’ শব্দটি এড়িয়ে গেছে। গতকালের আগেও একাধিবার এ প্রসঙ্গে তাদের অবস্থান ছিল নেতিবাচক। যুদ্ধ শুরুর পরে ইসরায়েলকে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে দুইটি রণতরী পাঠিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
২৪ ঘণ্টার হামলায় গাজায় নিহত ৩১০
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন চালিয়ে গত একদিনে ৩১০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার (৭ থেকে ৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জাতিসংঘের এক রিপোর্টের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা শহরের পূর্বে আল-দোরজ এলাকায় গুলিতে একটি বাড়ি ধসে পড়ে অন্তত ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা শহরের পূর্বাঞ্চলের দুটি বাড়িতেও হামলা চালালে সেখানেও অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। মধ্য গাজার নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের এক আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বাহিনী। এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন ফিলিস্তিনি। এদিকে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরের পশ্চিম এলাকার একটি আবাসিক ভবনে হামলা হলে অন্তত ৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই রয়েছেন নারী ও শিশু। শুধু তাই না, এই সময়ে ইসরায়েলি হামলায় ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।