ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাত ও জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া। এতে করে নিঝুম দ্বীপসহ হাতিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে নিঝুম দ্বীপের বহু হরিণ ভেসে গেছে এবং অনেক হরিণের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান নিঝুম দ্বীপের চেয়ারম্যান। ভারী বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে পানিবন্দী অসহায় মানুষের মাঝে।
নিঝুম দ্বীপের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন জানান, সোমবার (২৭ মে) সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করলেও সন্ধ্যায় পুনরায় ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সমগ্র এলাকা আবার প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে গত তিনদিন ধরে হাতিয়ার সঙ্গে বাইরের সব নৌ যোগাযোগ বন্ধ। তীব্র বাতাসের কারণে তিনদিন ধরে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ রয়েছে বলে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান জানান।
অন্যদিকে স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলী আজ দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী বরাবর ক্ষয়ক্ষতির যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তাতে দেখা গেছে নিঝুম দ্বীপে ৯ হাজার পরিবারের ৩০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩ হাজার ৫০০ কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
ঢালচরের ৪ হাজার পরিবারের ১০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, চর ঘাসিয়ায় ২০ হাজার পরিবার, চানন্দি ইউনিয়নের ৪ হাজার পরিবারের ১০ হাজার মানুষ ও ৫ শতাধিক কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
এছাড়া হরনী, চানন্দি, সুখচর, নলচিরা, সোনাদিয়া, জাহাজমারা, বুড়ির চর, চর ঈশ্বর, চরকিং, নলচিরা ইউনিয়নের ব্যাপক এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে এবং অনেক ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অপরদিকে নিঝুম দ্বীপ ও চানন্দী ইউনিয়নে বেড়ীবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে এই দুই এলাকায় ৫০ হাজার লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান।
মোহাম্মদ আলী আরো উল্লেখ করেছেন, হাতিয়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে প্রায় ১০০ কিলোমিটার কাঁচা পাকা রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে এবং হাজার হাজার গবাদি পশু ও বহু পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে হাতিয়ায় প্রায় ৫২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শুভাগত বিশ্বাস জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মাঝে সরকারি ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা যাচ্ছে না।