চিকিৎসা সেবাকে আধুনিক করার অংশ হিসেবে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য ডিজিটাল হেলথ কার্ড করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে ওই নাগরিকের স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। রোগীকে আর প্রেসক্রিপশন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফাইল সংরক্ষণের ঝামেলা পোহাতে হবে না। হাসপাতালে গেলে ওই কার্ড সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। এক কার্ডেই রোগীর সব তথ্য পাবেন চিকিৎসকরা। এ কার্ড চালু হলে রোগীকে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজতর হবে।
চলতি বছরের (’২৩) ১০ জানুয়ারি সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন যে সরকার সব মানুষকে স্বাস্থ্য কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর প্রোগ্রামের আওতায়। পুরো প্রকল্প পঞ্চম সেক্টর প্রোগ্রামের আওতায় বাস্তবায়ন হবে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, শুরুর দিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর এবং মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় পাইলট প্রকল্পের আওতায় দেওয়া হবে এই স্বাস্থ্য কার্ড। এরপর দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কার্ড দেওয়া হবে। সরকারি হাসপাতালের পর এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হবে অনুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোও।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (এমআইএস) বাস্তবায়ন করছে এই প্রকল্প। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের জন্য নির্বাচন কমিশন এবং জন্ম নিবন্ধনের জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের সাথে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে চিকিৎসা বিষয়ে অভিজ্ঞরা মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে বিশাল কর্মযজ্ঞ চালাতে হবে। এজন্য অতিরিক্ত লোকবল লাগবে, চিকিৎসা সেবায় জড়িতদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। যে রেফারেল করবে সেজন্য বড় হাসপাতালগুলো প্রস্তুত কি না সেই বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে।
যেভাবে মিলবে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্বাস্থ্য কার্ডের জন্য এক বিশেষ ওয়েবসাইট চালু করা হবে। ওই ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করলেই স্বাস্থ্য কার্ড পাওয়া যাবে। যারা অনলাইনে নিজে নিবন্ধন করতে পারবেন না, তারা অনুমোদিত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন। এজন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বা ১৮ বছরের কম-বয়সীদের জন্য জন্ম নিবন্ধনের অনুলিপি নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে। হাসপাতালে স্বাস্থ্য কার্ড তৈরি করে দেওয়ার জন্য নির্ধারিত কাউন্টার থাকবে। সেখান থেকে বিনামূল্যে এই কার্ড করে দেওয়া হবে।