ঢাকাসোমবার , ৬ মে ২০২৪
  • অন্যান্য

সুন্দরবনের আগুন নিভেছে, তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ৬, ২০২৪ ৩:৫৮ অপরাহ্ণ । ৭৩ জন

সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন বিভাগ। বনের আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পাশাপাশি নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকসহ পাঁচ শতাধিক মানুষ।

গত ‌শনিবার দুপুরে তাপপ্রবাহের মধ্যে আমরবুনিয়া এলাকায় হঠাৎ আগুন লাগে। কী কারণে আগুন লেগেছে, কতটুকু বন পুড়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে এর আগে ২২ বছরে ২৪ বারের অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০০ একর বনজ সম্পদ (সুন্দরী গাছসহ বিভিন্ন লতাগুল্ম) পুড়ে যায় বলে জানা গেছে। এতে কী পরিমাণ বন্যপ্রাণী মারা গেছে বা বাসা/বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তা জানা যায়নি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ডিএফও মো. নুরুল করীম জানান, অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম ও জিউধারা স্টেশন কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে যদি অগ্নিকাণ্ডে মানবসৃষ্ট কারণ পাওয়া যায়, তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে ২৪ দফার অগ্নিকাণ্ড খতিয়ে দেখতে বন বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটি নাশকতা, অসচেতনতা, অবহেলায় ফেলে দেয়া বিড়ি বা সিগারেটের আগুনকে দায়ী করেছে। তদন্ত কমিটি নানা সুপারিশ করেছে বনকে সুরক্ষা দিতে। এর মধ্যে অন্যতম বন ব্যবহারকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি, বনসংলগ্ন মরে যাওয়া নদ-নদী খনন এবং সীমান্ত এলাকায় বেড়া ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ। তবে তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন সব সময়ই উপেক্ষিত থেকে গেছে। এ পরিস্থিতিতে বন বিভাগ, স্থানীয় লোকজন ও পরিবেশবাদীরা বনজ সম্পদ সুরক্ষিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বারবার সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন।

এদিকে সুন্দরবনের আগুনের ব্যাপ্তি দুই বর্গকিলোমিটার বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। কাছাকাছি পানির সংকুলান না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের। গতকাল সকাল ৬টায় চাঁদপাই রেঞ্জের এ আগুন নেভাতে কাজ শুরু করেন তারা। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে রাতে নির্বাপণ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেবা প্রদানকারী সংস্থাটি। গতকাল রাতে সুন্দরবনে সংঘটিত অগ্নিদুর্ঘটনার হালনাগাদ সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনে ফায়ার সার্ভিস জানায়, বনে যে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে সেটা বুশফায়ার। বিভিন্ন অংশে বিচ্ছিন্নভাবে এখনো আগুন ছড়িয়ে আছে। এখনো ধোঁয়া বিদ্যমান। সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় পুনরায় অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রম শুরু হবে।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহিদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা ফায়ার লাইন কেটেছি, যাতে আগুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে। সোমবার সকালে আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে কাজ শুরু হবে।’