ঢাকাশনিবার , ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • অন্যান্য

স্ক্রাব টাইফাসের জ্বরও হতে পারে প্রাণঘাতী!

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ ৩:৪০ অপরাহ্ণ । ২১ জন

ব্যাকটেরিায়াজনিত রোগের মধ্যে অন্যতম একটি রোগ হলো স্ক্রাব টাইফাস। এ জ্বরের সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না হলে রোগী জীবন প্রদীপ নিভে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময়ের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্ক্রাব টাইফাস একটি জুনোটিক ডিজিজ। পশুর শরীর থেকে যা মানব শরীরে প্রবেশ করে।

জানা যায়, ওরিয়েনটিয়া স্টুটসুগামুসি নামের ব্যাকটেরিয়া থেকে স্ক্রাব টাইফাস ছড়ায়। সাধারণত ইঁদুরের শরীরে এ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যায়।

এ প্রসঙ্গে কলকাতার আমরি হাসপাতালে বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলছেন, ওরিয়েনটিয়া স্টুটসুগামুসি ব্যাকটেরিয়া বহনকারী ইঁদুর বা পোকা মানুষকে কামড়ালে মানুষ স্ক্রাব টাইফাস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আবার ব্যাকটেরিয়া বহনকারী ইঁদুরকে কোনো ছোট মাকড়সা কামড়ানোর পর ওই মাকড়সা যদি আবার কোনো মানুষকে কামড়ায় এতেও মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়ে স্ক্রাব টাইফাসে।

স্ক্রাব টাইফাস রোগের লক্ষণ

বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলছেন, এ রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে মূলত চারটি লক্ষণ দেখা যায়। এগুলো হলো-
১. জ্বর।
২. গা, হাত, পায়ে ব্যথা।
৩. মাথা ব্যথা।
৪. প্রাণীর কামড়ানো স্থানে র‌্যাশ বা কালো দাগ হওয়া।

এছাড়া আরও যেসব লক্ষণ থাকতে পারে তাহলো-
৫.সর্দি-কাশি, র‌্যাশ।
৬. গলা ব্যথা
৭. পেটের সমস্যা
৮. চোখ লাল হয়ে যাওয়া
৯. শরীরের লসিকাগ্রন্থিগুলোতে ফোলাভাব ইত্যাদি।

রোগ নির্ণয়

রোগীর জ্বর হলে তার কারণ খুঁজতে কিংবা স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে জ্বর এসেছে কি না তা জানতে রোগীকে সরাসরি স্ক্রাব টাইফাসের ব্লাড টেস্ট করতে হবে। এর মাধ্যমেই জানা যাবে রোগী স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত কি না।

চিকিৎসা

ঠিক সময়ে এ রোগের চিকিৎসা নিতে চিকিৎসকের কাছে আসলে ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে এ রোগ ও জ্বর ভালো হয়ে যায়। এর জন্য চিকিৎসকরা রোগীকে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে থাকেন। রোগটি নিয়ন্ত্রণে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিইন ওষুধ ব্যবহার করেন চিকিৎসকরা।

সতর্কতা

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলছেন, সঠিক সময়ে রোগীর চিকিৎসা শুরু হলে এ রোগে তেমন কোনো ভয়ের কারণ নেই। তবে চিকিৎসা শুরু দেরি হলে রোগীর কিডনি, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। শরীরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হতে পারে এনকেফালাইটিস। তখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। যা রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। তাই জ্বর বা অন্য যে কোনো লক্ষণে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াটা জরুরী বলে মনে করেন চিকিৎসক ডা: রুদ্রজিৎ পাল।