আমাদের শরীরে যেমন রক্তনালী আছে, তেমনি আছে মস্তিষ্কেও। রক্তনালীর মাধ্যমেই রক্ত-বাহিত হয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছে অক্সিজেনসহ শরীরের পুষ্টি-উপাদান।
মস্তিষ্কের কোষ ভীষণ সংবেদনশীল। কোনো কারণে মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলে বাধার সৃষ্টি হলে দেখা দেয় সমস্যা। হঠাৎই কার্যকারিতা হারায় মস্তিষ্কের কোনো অংশ। অক্সিজেন ও শর্করা সরবরাহে একটু হেরফের হলেই কোষগুলো মারা যেতে শুরু করে। নালীতে প্লাক (ফ্যাট বা কোলেস্টেরল) জমায় এ-ধরনের সমস্যা দেখা যায়। প্লাক রক্তনালীকে সরু করে তোলে। এটা অনেকটা রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামের মতো। ফলে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল হয় না এবং স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে।
স্ট্রোক আপনার মস্তিষ্কের একটি অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বা মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে যায়। এতে মস্তিষ্কের ক্ষতি, দীর্ঘমেয়াদি অক্ষমতা বা এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। স্ট্রোকে আক্রান্ত বেশিরভাগ লোকের বয়স ৬০-এর বেশি।
স্ট্রোকের সাধারণ কিছু লক্ষণ আছে যা মানুষ সহজেই বুঝতে পারে। তবে কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণ আছে যা বোঝা যায় না।
সাধারণ লক্ষণগুলো
- মুখের দুর্বলতা : স্ট্রোকের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে মুখের দুর্বলতা। স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবে হাসতে পারে না।
- হাত তুলতে না পারা : হাতের দুর্বলতাও সাধারণ উপসর্গের মধ্যে পড়ে। রোগীরা তাদের দুটো বাহু তুলতে পারেন না।
- কথায় জড়তা : তৃতীয় সাধারণ লক্ষণ হলো আক্রান্ত ব্যক্তি স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারেন না। কথা বলতে বা গিয়ে কথা জড়িয়ে যায়, বা ভুল শব্দ ব্যবহার করতে পারেন।
এসব লক্ষণগুলোর মধ্যে যে কোনোটি দেখা গেলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
এসব সাধারণ লক্ষণ ছাড়াও আছে কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণও—
১. স্ট্রোকের অস্বাভাবিক লক্ষণগুলোর মধ্যে শরীরের একপাশে অসাড়তা, ঝাঁকুনি বা সংবেদনশীলতা দেখা দিতে পারে।
২. কারও মধ্যে অস্থির চলাফেরা দেখা দিতে পারে অথবা মাথা ঘোরা অনুভব করতে পারেন।
৩. কিছু লোক হঠাৎ বমি বমি ভাব অনুভব করতে পারেন।
এ লক্ষণগুলো সরাসরি স্ট্রোকের কারণ নির্দেশ করে না। তবে এড়িয়ে না গিয়ে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ভালোভাবে জানার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।