সড়কে শঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার পাশাপাশি নতুন করে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন বক্তারা। আজ বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটি ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘নিরাপদ ও টেকসই যাতায়াত ব্যবস্থা: বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই মতামত ব্যক্ত করেন তারা।
ডিএনসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অতিরিক্ত সচিব মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর রোড সেইফটি এন্ড ইনজুরি প্রিভেনশন প্রোগ্রামের পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রোড সেইফটি এন্ড ইনজুরি প্রিভেনশন প্রোগ্রামের ম্যানেজার মোহাম্মদ ওয়ালী নোমান। তিনি বলেন, বিশ্বে সকল বয়সের মানুষের মৃত্যুর ৮ম প্রধান কারণ রোডক্র্যাশ। এর কারণে প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ মারা যান। একই সাথে ৫-২৯ বছর বয়সের শিশু ও তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণ রোডক্র্যাশ।
তিনি আরও বলেন, সড়ককে নিরাপদ করার জন্য জাতিসংঘের কৌশলপত্রে পাঁচটি স্তম্ভের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো, সড়ক নিরাপদ করতে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ যানবাহনের ব্যবস্থা, সড়ক ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, রোডক্র্যাশ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা ও যান চলাচলের নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান এবং রোড সেইফটি এন্ড ইনজুরি প্রিভেনশন প্রোগ্রামের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, ক্রমাগত রোডক্র্যাশ বৃদ্ধির কারণে চিকিৎসকদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। অথচ কার্যকর একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা গেলে এই রোডক্র্যাশের সংখ্যা অনেকটা কমে আসবে। ফলে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে এবং স্বাস্থ্যখাত ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বাজেটের উপর চাপ কমবে।
আলোচনা সভার সভাপতি ডিএনসিসি’র সিইও অতিরিক্ত সচিব মো. সেলিম রেজা বলেন, সড়কে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবপক্ষের সদিচ্ছা থাকতে হবে। একই সাথে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে যেসব সংস্থা কাজ করেন তাদের সাথে একযোগে কাজ করলে সহজেই জাতিসংঘের সেফ সিস্টেম এপ্রোচ অনুয়ায়ী সড়ককে নিরাপদ করা সম্ভব হবে। আর এটি করা গেলে সহজেই ২০৩০ সালের মধ্যে যে রোডক্র্যাশ ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, পিএসসি, মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে: কর্ণেল মোঃ গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নাঈম রায়হান খান ও ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেইফটি’র ডিএনসিসি’র ইনিশিয়েটিভ কো-অরডিনেটর আব্দুল ওয়াদুদসহ আরও অনেকে।