চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। নিম্ন আয়ের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণকারী ব্রয়লারের হটাৎ মূল্যবৃদ্ধিতে বেকায়াদায় পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।
মুরগির হটাৎ দামবৃদ্ধির জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন খামারিদের। তবে খামারিদের দাবি, মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গত কয়েক মাস ধরে বাচ্চা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। কোনো কোনো হ্যাচারি মালিক মুরগি লালন পালন ও কন্ট্র্যাক্ট ফার্মিংয়ে (পছন্দের খামারিকে চুক্তিভিত্তিক কম দামে সরবরাহ) জড়িত হচ্ছেন।
অন্যদিকে বাড়ছে মুরগির খাবারের দামও। তাছাড়া প্রান্তিক খামারিদের হটিয়ে নামিদামি কয়েকটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান পোল্ট্রি শিল্প পুরোপুরি নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ কৃত্রিম সংকট দূর করা না গেলে মুরগির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা খামারিদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানকে সামনে রেখে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এখন প্রতিকেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৩০ টাকা। প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদিও গত বছরের মতো ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়েনি। তবে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতো মুরগির দামও বাড়ছে। এ কারণে বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। ফলে দাম বাড়ছে। গতবারের মতো এবারও শবে বরাত ও রমজানের আগে যাতে বাজারে কোনো ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজরদারি করতে হবে বলে মনে করছেন মুরগি ব্যবসায়ীরা।
মিরসরাই পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলা উদ্দিন বলেন, পোল্ট্রি শিল্প এখন খামারিদের কাছে নেই। বাচ্চার ও খাদ্যের দাম বাড়ানোর কারণে অনেক খামারি পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব। এ সুযোগে বড় বড় হ্যাচারি মালিকরা নিজেদের মতো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এক সময় আমাদের উপজেলায় প্রায় দুই হাজার খামারি ছিল। এখন প্রায় অর্ধেক কমে গেছে।
চট্টগ্রাম পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিটন চৌধুরী বলেন, গত তিনমাস ধরে খামারিরা বাচ্চা পাচ্ছে না। বাচ্চার কৃত্রিম সংকট। শুধু মিরসরাই কিংবা চট্টগ্রাম নয়, পুরো বাংলাদেশে হাতেগোনা ১৫ থেকে ২০টি প্রতিষ্ঠান মালিক এটা নিয়ন্ত্রণ করছেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মুরগির দাম বাড়ছে আসলে সরবরাহ ও চেইন সমস্যার কারণে। আমরা তিনমাস ধরে বলছি সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত হচ্ছে। বড় হ্যাচারিগুলো সরবরাহ দিচ্ছে না। ওরাই ঝামেলা করছে।