ঢাকাশনিবার , ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অন্যান্য

হৃদরোগ, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে জনগণকে সচেতন করতে হবে : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪ ৬:৪৯ অপরাহ্ণ । ১২১ জন

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, বিশৃংখল জীবনযাপন ও জলবায়ু পরিবর্তন সহ নানাবিধ কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বে হৃদরোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অসংক্রামক এই রোগটি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে এবং রোগের চিকিৎসা আরও সহজ ও সহজলভ্য করার আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন।

দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা কম। বিপুল জনগোষ্ঠীকে মানসম্পন্ন ও সহজলভ্য চিকিৎসা সেবা প্রদান বড় চ্যালেঞ্জ। তাই বিপুল জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা প্রদানে ডাক্তার ও নার্সদেরকে আরো আন্তরিক হওয়ার আহবান জানান রাষ্ট্রপতি। বলেন, দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা প্রদানে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। অর্থের অভাবে তারা যাতে চিকিৎসা বঞ্চিত না হন বা অবহেলার শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে আপনাদের অধিক সর্তকতা, দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্বের সাথে সেবা প্রদান করার কথাও জানান রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন।

রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারভেনশনাল একাডেমির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হৃদরোগ বিষয়ক ৪র্থ আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

আজকের সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি। চিকিৎসা বিজ্ঞান নিত্য পরিবর্তনশীল। নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব এর সাথে সাথে রোগ জয়ের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগিয়ে যাচ্ছে । দেশ ও অঞ্চল ভেদে রোগের প্রকৃতি ও ধরন আলাদা। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে রোগের প্রকার ধরন ও প্রকৃতি পরিবর্তন হতে পারে। এসব বিবেচনায় রেখে চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। উন্নত বিশ্বের গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে চিকিৎসকদের জানতে হবে। এবং তাতে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে হবে হৃদরোগ ক্যান্সার এইডস সহ অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে জনগণকে সচেতন করে তোলার কথা জানান রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন।

আজকের হৃদরোগ বিষয়ক আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে দেশি-বিদেশি বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন। জ্ঞানের আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমাদের দেশের চিকিৎসকবৃন্দ সমৃদ্ধ হবেন । বিশেষভাবে তরুণ চিকিৎসকদের সামনে উন্মোচিত হবে জ্ঞানের নতুন দিগন্ত । বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন মজা করে বলেছিলেন ‘তরুণ চিকিৎসক আর বৃদ্ধ নাপিত হতে সাবধান’। আমি মনে করি আমাদের চিকিৎসক বিশেষ করে, তরুণ চিকিৎসকদের দক্ষতা অভিজ্ঞতা ও পেশাদারিত্বের উন্নয়নে এই সম্মেলন ইতিবাচক অবদান রাখবে। হৃদরোগের উন্নততর চিকিৎসা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও তারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। কমিউনিটি পর্যায়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আরও সহজেই উন্নত চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখার তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।

নৈতিকতা ও পরোপকারী তার মনোভাব সমুন্নত রেখে অসুস্থ ও রোগাক্রান্ত মানুষের একনিষ্ঠ সেবাতেই আপনাদের পেশার সার্থকতা বলে জানান রাষ্ট্রপতি। পেশা হিসেবে চিকিৎসা বরাবরই সম্মানজনক। কেবল অর্থ উপার্জন নয়, সত্যিকারের মানবসেবাই এর উদ্দেশ্য। চিকিৎসা পেশার সাথে নীতি-নৈতিকতার প্রাসঙ্গিকতা খুবই গভীর। তাই মেডিকেলের মূলনীতিগুলো সার্বক্ষণিক চর্চা করতে হবে। দুঃখজনক হলেও এটা সত্য যে, আজকাল প্রায়ই গণমাধ্যমে কতিপয় চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নেতিবাচক, অনৈতিক, অমানবিক ও মানহানিকর সংবাদ তুলে ধরা হয়। এতে গোটা চিকিৎসক সমাজের সততা ও সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হয়। রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন বলেন, জনমনে নেতিবাচক ধারণার জন্ম নেয়। তাই আমি আশা করব চিকিৎসক নামধারী কিছু অসাধু লোকের জন্য যাতে আমাদের সম্মানিত চিকিৎসকদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে কোনো নেতিবাচক ধারণার জন্ম না নেয়, সে ব্যাপারে আপনারা সতর্ক থাকবেন। অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক এর মাধ্যমে বা ভুয়া ডাক্তার সেজে কেউ যাতে রোগীদের প্রতারণা করতে না পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে । সরকার ইতিমধ্যে এসবের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে।

আমি আশা করি, আপনারা এ ব্যাপারে সরকারকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবেন। রোগীদের সাথে সংবেদনশীল ও ভালো আচরণ করবেন এবং রোগীদের মর্যাদা ও গোপনীয়তা রক্ষায় বিষয়ে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করবেন। এসময় রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন বলেন, আপনারা সমাজের মেধাবী, প্রজ্ঞাবান ও বিদগ্ধ ব্যক্তি তাই আপনাদের দায়িত্ব অনেক বেশি।