ক্যান্সারসহ নানা গুণাগুণ সমৃদ্ধ মহৌষধি ননী ফল চাষ হচ্ছে টাঙ্গাইলে। ননী ফলের বৈজ্ঞানিক নাম ‘মরিন্ডাসিট্রিফলিয়া’। এটি আফ্রিকা অঞ্চলের একটি ফল। তবে ফলটি ক্রান্তীয় অঞ্চল অর্থাৎ ভারত উপমহাদেশেও জন্মায়। বাণিজ্যিকভাবে এ ফল চাষ করে সাড়া ফেলেছেন টাঙ্গাইলের কৃষি উদ্যোক্তা বাবুল হোসেন। প্রতিদিন তার বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থী ও ক্রেতারা ভিড় করছেন।
বাবুল হোসেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার পৌংলী উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, বর্তমানে আফ্রিকান, ইন্ডিয়ান ও মালয়েশিয়ান জাতের প্রায় ৩০০ ননী ফল আছে বাবুলের বাগানে। ননী ফল অন্যান্য কৃষিপণ্যের চাইতে লাভজনক হওয়ায় এ ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরাও।
সরেজমিনে দেখা যায়, থোকায় থোকায় ঝুলে আছে বাগানভর্তি নানা গুন সমৃদ্ধ ননী ফল। নিয়ম করে প্রতিদিন বাগান পরিচর্যা করেন কৃষি উদ্যোক্তা বাবুল হোসেন। তিনি করোনা মহামারী শুরু হওয়ার আগে ভারতে ভেষজ উদ্ভিদ বিষয়ে একটি কর্মশালায় অংশ নেন। সেখান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি দেশে এসে এক বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন ঔষধি গুণসম্পন্ন ননী ফলের বাগান।
উদ্যোক্তা বাবুল হোসেন জানান, ননী গাছে ১২ মাস ফল ধরে। বর্তমানে এ ফল বাজারে ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এর চারাও ৬০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। ননী গাছের পাতা ও ফল মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির এক মহৌষধ। যদিও এখন পর্যন্ত খুব কম মানুষের কাছেই এ ফলটি পরিচিত। তবে বর্তমানে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ননী ফলের রস বোতল-ভর্তি করে বাজারজাত করছেন।
ইতিমধ্যে বাবুল হোসেনের ননী ফল দেশে ব্যাপক সাড়া ফেলছে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা এসে ভিড় করছেন, আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরাও।
উদ্যোক্তা বাবুল হোসেন জানান, জায়গা ও আর্থিক সমস্যার কারণে বাগান বড় করতে পারছেন না তিনি। ননী ফল চাষ করে যেমন লাভবান হচ্ছি, মানুষও উপকার পাচ্ছেন। সরকারিভাবে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পেলে বড় পরিসরে ফল চাষ করার ইচ্ছে তার।
এ দিকে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন জানান, ননী ফলের বাগান বাণিজ্যিকভাবে নাই। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে এর বিস্তার ঘটানো যায় সে বিষয়ে কথা বলে উদ্যোক্তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।