ঢাকাবুধবার , ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

৪৭ দিন পর বেনাপোলে ভারত-বাংলাদেশ রেলপথ বাণিজ্য শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪ ৩:৪০ অপরাহ্ণ । ৩৯ জন

৪৭ দিন বন্ধ থাকার পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে রেলপথে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে গত ১৯ জুলাই থেকে বন্ধ ছিল দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত ও রেলপথ বাণিজ্য। এরপর দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আলোচনার প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) পুনরায় শুরু হয় রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথে ভারতের সঙ্গে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যসহ পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত করে থাকে। গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারত সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল ১৯ জুলাই থেকে দুই দেশের মধ্যে রেলে পণ্য পরিবহন ও পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়। এ সময় বন্ধ করা হয়েছিল বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া। তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থায় স্বাভাবিক হয় দেশ। এতে রেল কর্তৃপক্ষ বাণিজ্য ও যাত্রী চালুর দাবিতে ভারত সরকারের রেল কর্তৃপক্ষকে গত ১২ আগস্ট চিঠি দেয়। কিন্তু নানান অজুহাতে সাড়া না দেওয়ায় দেশে বাণিজ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি বাংলাদেশনির্ভর ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলোও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে ভারত সরকার ৪৭ দিন পর বুধবার রেলপথে পণ্য পরিবহন সেবা চালু করেছে।

আমদানিকারক মনির হোসেন বলেন, ‘ব্যবসার কাজে প্রায়ই ভারত যেতে হয় ব্যবসায়ীদের। ভিসা বন্ধ থাকায় ভারতে যাতায়াতে অসুবিধায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। দ্রুত ভিসা চালু করার দাবি জানাচ্ছি।’

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মহসিন মিলন জানান, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বেনাপোল দিয়ে রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েন। পুনরায় এ বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

তিনি আরও জানান, এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেলপথে পাথর, জিপসাম ও সিমেন্ট তৈরির সামগ্রী আমদানির পাশাপাশি এখন গার্মেন্টস, কেমিকেল, মোটরকারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। ভারতের কলকাতা থেকে সড়ক পথে ট্রাকে পণ্য পরিবহনে ৫ থেকে ৭ দিন লেগে যায় সেখানে রেলপথে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় বেনাপোল বন্দরে পণ্য পৌঁছায়।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, বেনাপোল দিয়ে রেলপথে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহন চালুর জন্য গত মাসের ১২ আগস্ট ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এরপর এ মাস থেকে পুনরায় রেলপথে পণ্য আমদানি-রপ্তানি চালু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভারত থেকে রেলযোগে ৪২ ওয়াগন জিপসাম সার আমদানি হয়েছে। যার আমদানিকারক যশোরের নোয়াপাড়া এবি এন্টারপ্রাইজ।

রেলপথে খুব দ্রুতই যাত্রী যাতায়াত চালু হবে বলে জানান সাইদুর রহমান।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক রেজাউল করিম জানান, দীর্ঘদিন রেলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর পুনরায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু হয়েছে এবং পণ্য দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।