স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ফেনী। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। বন্যায় এ খাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৯৬ কোটি ১০ লাখ টাকার ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। বানের পানিতে মারা গেছে প্রায় দুই হাজার খামারের ৫৪ হাজারের বেশি গবাদিপশু। আর মৎস্য খাতে এখন পর্যন্ত ২৮ কোটি ৯ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। সব হারিয়ে দিশেহারা খামারিরা।
ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, জেলায় নেমেছে বন্যার পানি। তবে বানের পানিতে ভাসছে হাজারো মৃত মুরগি। বেঁচে নেই বন্যায় আটকে যাওয়ায় খামারের ভেতরের পাখিগুলোও। বসতবাড়ি, রাস্তাঘাতের ক্ষতচিহ্ন যেন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, বন্যায় জেলায় মাছ চাষিদের ২৮ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ খাতে অন্তত ২০ হাজার মানুষ।
এ দিকে ফেনীতে প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গরু মারা গেছে ৩৮ হাজার ৭৩১টি, ছাগল সাড়ে ১৫ হাজারের বেশি, মহিষ ৩৫৯টি, মুরগি ২১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি, এক লাখ ৮৯ হাজারের বেশি হাঁস মারা গেছে।
প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, বন্যায় এ খাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৯৬ কোটি ১০ লাখ টাকার ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। পানিতে ডুবে জেলায় ৩৮ হাজার ৭৩১টি গরু ও ২১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মুরগি। অনেক খামারির ব্যাংক ঋণ থাকায় হতাশার মধ্যে আছেন। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতার দাবি খামারিদের।
খামারিরা বলেন, ‘মুরগির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। না খেয়ে আমরা কোনো রকম বেঁচে আছি, সেখানে মুরগি বাঁচাবো কি করে? আমরা খামারিরা ধ্বংস হয়ে গেছি। বানের জলে মাছও ভেসে গেছে। এ সময় প্রান্তিক খামারিদের সহায়তা করলে আবারও ঘরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে।’
ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও প্রণোদনা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে ফেনী জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বলেন, ‘শিগগিরই সংশ্লিষ্ট দফতর মন্ত্রণালয় থেকে তাদের প্রণোদনা বা সহায়তা করার জন্য একটা নির্দেশনা আসবে। দ্রুতই আমরা এ ব্যাপারে তাদের সাহায্য করতে পারবো বলে আশা করছি।’