লাগামহীন দেশের ডিমের বাজার। দাম নিয়ন্ত্রণে ডিম আমদানির অনুমতিও দিয়েছে সরকার। এতে পাইকারিতে দাম কমলেও প্রভাব নেই খুচরায়। আর বাড়তি দামের প্রভাবে নিম্ন আয়ের মানুষের ভরসা এখন ভাঙা ডিমেই। দেশজুড়ে গত এক মাসের ব্যবধানে ডজনে ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম বেড়ে ঠেকেছে ১৮০ টাকায়। এতে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা। ফলে বাজারে চাহিদা বেড়েছে ভাঙা ডিমের। এই সুযোগে ভালো ডিমের পাশাপাশি দাম বেড়েছে ভাঙা ডিমেরও।
রাজধানীর কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে নেই পর্যাপ্ত লাল ডিম। যা আছে, সেগুলোও বিক্রি হচ্ছে ডজন প্রতি ১৭০ টাকায়। আর সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা। তবে ভালো ডিমের পাশেই সাজিয়ে রাখা হয়েছে ভাঙা ডিম।
বিক্রেতারা বলছেন, ডিমের দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে ভাঙা ডিম কেনার প্রবণতা বেড়েছে। এসব ডিম স্বল্প আয়ের মানুষেরা কিনছেন। রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ডিম বিক্রেতা রায়হান বলেন, ভালো ডিমের চেয়ে ভাঙা ডিমের চাহিদাই বেশি। দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় ভাঙা ডিমের প্রতিই ঝুঁকছেন মানুষ।
আর ক্রেতারা বলছেন, দামের ঊর্ধ্বমুখিতার কারণে ডিম কেনাই মুশকিল হয়ে গেছে। ভাঙা ডিম কিনতে আসা এক ক্রেতা ইকবাল বলেন, বাজারে নাগালের বাইরে শাক-সবজির দাম। এতে ডিমের ওপর ভরসা করা যেত। কিন্তু ডিমের বাজারের বর্তমান অবস্থায় ভাঙা ডিমেই ভরসা করতে হচ্ছে। কিন্তু সেটিরও দাম বেশি। প্রতি হালি ভাঙা ডিমের জন্য গুনতে হচ্ছে ৪০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ৭ প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ৫০ লাখ পিস ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত ৮ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য-১ শাখা জানিয়েছে, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রতিদিন প্রায় ৫ কোটি পিস ডিমের চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে ডিমের বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ও বাজারদর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সাময়িকভাবে সীমিত সময়ের জন্য ৭টি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এ আমদানির অনুমতির মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে। আমদানির শর্ত অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে আমদানিকারকদের।
আর ডিম আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আরেক দফা চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। সংস্থাটির বাণিজ্য নীতি বিভাগের উপপ্রধান মাহমুদুল হাসান জানান, বাজারে বাড়ছে ডিমের দাম। এ পরিস্থিতিতে ডিম আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য আরেক দফা এনবিআরকে চিঠি দেয়া হয়েছে।