ঢাকারবিবার , ২০ আগস্ট ২০২৩
  • অন্যান্য

অন্তর্ভূক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন আনয়নে ‘সার্বজনীন পেনশন স্কিম’ একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ : ডিসিসিআই সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ২০, ২০২৩ ৩:৪৮ অপরাহ্ণ । ১৮৮ জন

সম্প্রতি সরকার প্রবর্তিত ‘সার্বজনীন পেনশন স্কিম’ দেশের সকল স্তরের জনমানুষকে টেকসই সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বলয়ে অন্তর্ভূক্তিকরনে কার্যকর ও সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ বলে মনে করেন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মোঃ সামীর সাত্তার। তিনি বিশ^াস করেন, এটি সরকারের একটি জনবান্ধব উদ্যোগ, যা দেশের অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে। আমাদের সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকল্পে বিশেষকরে বেসরকারিখাতে কর্মরত জনগোষ্ঠী, প্রবাসী, অনানুষ্ঠানিক খাত এবং নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য ‘প্রগতি’, ‘সুরক্ষা’, ‘সমতা’ এবং ‘প্রবাসী’ নামে ৪টি প্যাকেজের মাধ্যমে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীকে এ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হবে। উল্লেখ্য, ‘সমতা’ স্কিমের আওতায় স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের পক্ষ হতে ৫০% চাঁদা সহায়তার উদ্যোগ খুবই ইতিবাচক একটি দিক।

ঢাকা চেম্বার বিশ্বাস করে, বৈশি^ক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবং আর্থিক কৃচ্ছতা সাধনের মত পরিস্থিতিতে, সার্বজনীন পেনশন স্কিম আমাদের অর্থনীতিতে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ কর্মসূচি সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচন করবে, যেটি আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ও ব্যয় হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার মনে করেন, এটি কেবলমাত্র দেশের সর্বস্তরের মানুষের জন্য সময়োপযোগী ও ফলপ্রসূ উদ্যোগই নয়, আমাদের বেসরকারিখাতও এর মাধ্যমে উপকৃত হবে। তিনি আরো মনে করেন, এ বিশাল উদ্যোগ ব্যাংক খাত হতে সরকারের ঋণ গ্রহণের প্রবণতা হ্রাস করবে এবং সরকারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন আর্থিক উৎসের সৃষ্টি করবে। সেই সাথে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশী ঋণ গ্রহণ হ্রাস করবে, যেটি দেশের জিডিপিতে বিনিয়োগের অংশীদারিত্বকে বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও বেসরকারিখাতের জন্য প্রতিযোগী মূল্যে অর্থ প্রাপ্তিতেও সহায়তা করবে। একই সাথে আমাদের স্থানীয় বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এমএসএমই খাতে কর্মরত বিপুল জনগোষ্ঠীকে ‘প্রগতি’ স্কিমের আওতায় তাদের বার্ধক্যকালীন সময়ে সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, যেটি আমাদের বেসরকারিখাতে কর্মরত মানুষের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধির পাশাপাশি চাকুরীত্যাগের প্রবণতাকেও হ্রাস করবে।

নেদারল্যান্ডস্, ডেনমার্ক, জার্মানী, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, কানাডা, আইসল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ড সহ পৃথিবীর অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে এ ধরনের জনবান্ধব উদ্যোগ চলমান রয়েছে। এ ধরনের কর্মসূচি পরিচালনায় উল্লেখিত দেশসমূহের অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের ‘সার্বজনীন পেনশন স্কিম’ কার্যকরভাবে পরিচালনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির বহুল প্রত্যাশিত রপান্তরকে বেগবান করবে।

যদিও, এ পেনশন স্কিমের মাধ্যমে আমাদের জনগনের আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের সার্বিক অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করবে, তবে এ কর্মসূচির বিভিন্ন স্কিমের বিপরীতে প্রতিযোগিতামূলক ও নিরাপদ পেনশন প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, সুশাসন এবং সাধারণ জনগনের এ অর্থ পরিচালনায় দক্ষ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিষয়গুলো ভবিষ্যতে দেশের মানুষকে এ স্কিমের প্রতি আরো বেশি হারে আকৃষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন, ডিসিসিআই সভাপতি।