জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে না পারলে চলতি শতাব্দী শেষে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সংস্থাটির পরিবেশ কর্মসূচির একটি বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে। রয়টার্স ও পরিটিকো।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। এই বৃদ্ধি রোধে উন্নত দেশগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
বৈশ্বিক গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের ৭৭ শতাংশের জন্য উন্নত দেশগুলোর জোট জি-২০কে দায়ী করেছেন প্রতিবেদনটির প্রধান বৈজ্ঞানিক সম্পাদক অ্যান ওলহফ। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে অগ্রগতির দিকে তাকাই, বিশেষ করে জি-২০ সদস্য দেশগুলোর দিকে- তারা ২০৩০ সালের জন্য বর্তমান জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খুব বেশি অগ্রগতি করতে পারেনি।’ জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ রোধে বর্তমানে যেসব নীতি বা বিধি রয়েছে, সেগুলোর আওতায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা সম্ভব নয়। যদি তা সম্ভব হয়ও, তবুও ২১০০ সালে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ থেকে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (২ দশমিক ৭ ফারেনহাইট) মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে ২০১৫ সালে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল রাষ্ট্রগুলো। এটি ‘প্যারিস চুক্তি’ নামে পরিচিত।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে অবশ্যই ৪২ শতাংশ গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ রোধ করতে হবে। আর ২০৩৫ সালের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রা হতে হবে ৫৭ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার এক বক্তৃতায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েছি। বিশ্বনেতারা হয় নির্গমনের ব্যবধান পূরণ করবেন, নয়তো আমরা জলবায়ু বিপর্যয়ের মধ্যে ডুবে যাব।’
প্রতিবেদনটিতে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ রোধে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিশ্বের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঢেলে সাজানোর এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা ও বেসরকারি বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।