ঢাকাশনিবার , ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • অন্যান্য

‘শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের চিকিৎসা অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ’ : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ২৬, ২০২৪ ৬:০২ অপরাহ্ণ । ২৭ জন

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে অর্ন্তবর্তী সরকার গঠনের কথা স্মরণ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্নরূপে চিকিৎসাদান। এখনও অনেক ছাত্র-জনতা হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছে, ছাত্রদের সাথে সাধারণ অনেক মানুষও নিহত হয়েছে। এছাড়া তিনি বলেন, দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়েনি, বেড়েছে ধান ও চালের। খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নটি এখন অনেকভাবেই আলোচিত হচ্ছে। ষাটের কিংবা সত্তুর এর দশকে এক সময় বলা হতো সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাবে। তাই ধানে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির কথা বলেছেন উপদেষ্টা।

আজ (২৬শে অক্টোবর) শনিবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনফারেন্স হলে বিশ্ব ডিম এবং বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২৪ উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেফ ফুড কর্তৃক আয়োজিত “খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জাতীয় প্রযুক্তিগত সেমিনারে” উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এসব কথা বলেছেন।

উপদেষ্টা বলেছেন, দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়েনি, বেড়েছে ধান ও চালের। খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নটি এখন অনেকভাবেই আলোচিত হচ্ছে। ষাটের কিংবা সত্তুর এর দশকে এক সময় বলা হতো সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাবে। পরবর্তীতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্হা-শুধু খাদ্য উৎপাদন নয় খাদ্য নিরাপত্তার কথা বলে আসছে। তিনি ধানে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির কথা বলেছেন।

ফিড আমদানির কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেছেন, ফিডের সাথে অনেক ইনগ্রেডিয়েন্টস আমদানি করতে হয়। ফিড যদি নিরাপদ না হয় তাতে যদি এন্টিবায়োটিক থাকে আমাদের শরীরও নিরাপদ থাকবেনা। নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ এখন সময়ের দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নিরাপদ খাদ্যে সর্বোচ্চ ব্যবস্হ গ্রহণ করবে।

মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও কৃষিতে হার্বিসাইড বন্ধের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেছেন হার্বিসাইড ব্যবহারের ফলে গরু-ছাগল মারা যাচ্ছে আর এটা বন্ধ না করলে কোন অবস্হাতেই আমরা সুস্হ ও নিরাপদ থাকতে পারবোনা।

বক্তারা বলেছেন, নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে সকল পর্যায়ে সচেতনার উদ্যোগ নেওয়া এখন জরুরী। উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার টেবিলে আসা পর্যন্ত প্রত্যেকটি পর্যায়ে সকলের সচেতনতা প্রয়োজন। সবাই সচেতন হলে সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠনে আমরা অগ্রসর হতে পারব এবং সুস্হ ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সম্ভব।

এরপর প্রধান অতিথি সেফ ফুড ডাইজেস্টের মোড়ক উন্মোচন করেন, উপদেষ্টাকে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেফ ফুড কতৃক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড.মো: খালেদ হোসেনের সভাপতিত্বে চিফ প্যাট্রন হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ কে ফজলুল হক ভূঞাঁ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.কাজী রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো: জাকারিয়া, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, আইইডিসিআর এর পরিচালক প্রফেসর ডা.তাহমিনা শীরিন, গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন বিপিআইসিসি এর প্রেসিডেন্ট শামসুল আরেফিন এছাড়া অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন প্রফেসর ড.মো: মাহমুদুল হাসান শিকদার প্রমুখ।

সেমিনারে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী এবং সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ময়মনসিংহের বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। উপদেষ্টা বিলুপ্তপ্রায় মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে লাইভ জিন ব্যাংকের মাধ্যমে বিজ্ঞানীদের আরও গবেষণা কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। এর আগে উপদেষ্টা বিএফআরআই-এ বৃক্ষরোপণ করেন। বিএফআরআই এর মহাপরিচালক ড.অনুরাধা ভদ্র, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোঃ আজিজুল ইসলামসহ বিএফআরআই এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।