ঢাকাশনিবার , ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশ ইয়ুথ কপ

সবুজ ইশতেহার বাস্তবায়নে তরুণ প্রজন্মের অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩ ১১:১৮ অপরাহ্ণ । ১৩৭ জন

জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় তৃণমূল থেকে তরুণদের কণ্ঠস্বরকে জোরদার, জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবি এবং বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণী আলোচনায় তাদের দাবিগুলির উপস্থাপন করতে, একশনএইড বাংলাদেশ এবং ব্রাইটার্স ইয়ুথ সোসাইটি যৌথভাবে গত ৬ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তিন দিনব্যাপী হাইব্রিড পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ইয়ুথ কপ ২০২৩ এর আয়োজন করে।

যুব-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ এবং সবুজ ইশতেহারের তাৎপর্যের উপর জোর দিয়ে জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য নবায়ণযোগ্য শক্তি, লস অ্যান্ড ডেমেজ এবং লিঙ্গ ভিত্তিক অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর আলোচনা হয় এই সম্মেলনে। এতে, ১০০ জন তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি যুক্ত হয়ে নিরাপদ পানীয় জল, জলাভূমি সংকট, খরা এবং বন্যা প্রভাবিত এলাকার দুর্ভোগসহ জলবায়ু সংকট দূর করতে নানান দাবি তুলে ধরেন। এছাড়াও তারা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কার্বন ক্রেডিট, দূষণকে টেকসই সমাধানে রূপান্তর এবং কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তায় উদ্ভাবনের সুযোগসহ বিকল্প অনুশীলনের বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

উদ্বোধনী অধিবেশনে একশনএইড বাংলাদেশে-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, “তরুণরা জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং টেকসই উন্নয়নের মধ্যে সংযোগ উপলব্ধি করতে পেরেছে। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাদের দাবী ও বক্তব্য অবশ্যই কপ ২৮-এ পৌঁছাতে হবে। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে ইয়ুথ কপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতীয় পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে নীতিনির্ধারক এবং যুব নেতৃত্বের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন স্থাপিত হবে।“

তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি মোঃ আল আমীন বলেন, “আমাদের দেশের মিঠা পানি দিন দিন লবণাক্ত হয়ে পড়ছে যা কৃষি ও নিরাপদ পানির সংকট তৈরি করছে। বরগুনা, সাতক্ষীরার মতো উপকূলীয় এলাকায় বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার দেখতে পাই আমরা। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে নারী- শিশুরা অনেক বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই এখনই সময় জলবায়ু সংকট ঠেকাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের।”

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুর্যোগ-প্রবণ অঞ্চলগুলির উপর গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুর্যোগ-প্রবণ অঞ্চলের তরুণ অংশগ্রহণকারীরা জলবায়ু ন্যায়বিচার অর্জনের জন্য টেকসই সমাধানের প্রস্তাব তুলে ধরেন। দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে লস এন্ড ড্যামেজ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে জলবায়ু অভিযোজন নীতিসহ জলবায়ু সংকট উত্তরণে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসে। আসন্ন কপ ২৮ সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়ন এর অন্তর্ভুক্তির ও কার্যকর করার উপর জোর দেন তরুণ জলবায়ু কর্মীরা।

সমাপনী দিনে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ডঃ ম্যাটিয়া ভেনচুরা, হেড অফ মিশন, ইতালীয় দূতাবাস; গোয়েন লুইস, বাংলাদেশের জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী; ডঃ সালেমুল হক, পরিচালক, আইসিসিএডি এবং ফারাহ্ কবির, কান্ট্রি ডিরেক্টর, একশনএইড বাংলাদেশ আলোচকবৃন্দ মিলান ইয়ুথ কপ-এর ফলো-আপ কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন এবং টেকসই জলবায়ু ন্যায়বিচার অর্জনে স্থানীয় অভিযোজনে যুবকদের সম্পৃক্ততা, লস অ্যান্ড ড্যামেজ মোকাবেলায় প্রান্তিক যুবকদের ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেন। বাংলাদেশ ইয়ুথ কপ ২০২৩ আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইশতেহারকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তরুণদের দাবির রূপরেখা, অভিযোজন কৌশল প্রণয়ন এবং জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই কর্মসূচির মাধ্যমে তৈরি সবুজ ইশতেহারের পক্ষে সমর্থন প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমাপ্ত হয়।