আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশির জন্য সব ধরনের ভিসা বন্ধ করে দেয় ভারত। পরে শুধু চিকিৎসা ও জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে ভিসা চালু করে। তবে তা পেতে অনেক বেগ পেতে হয়। এ অবস্থায় চিকিৎসাসেবা দিতে এগিয়ে আসে চীন। দেশটির কুনমিং প্রদেশে বাংলাদেশিদের জন্য তিনটি হাসপাতাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত জানালেন, বাংলাদেশি রোগীদের এক দিনের মধ্যে ভিসা দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় চীনা দূতাবাসে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বাংলাদেশি রোগীদের চীনে চিকিৎসা নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, এক দিনের মধ্যে ভিসা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, কুনমিংয়ের তিনটি হাসপাতাল বাংলাদেশিদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সেখানে চিকিৎসা নিতে চাইলে বাংলাদেশিরা যেন সরাসরি দূতাবাসে আসতে পারেন এবং আমরা যেন ওইদিনই ভিসা দিতে পারি সে রকম ব্যবস্থা করতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে বহুল আলোচিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন রাষ্ট্রদূত। তিস্তা প্রকল্প দ্রুত শুরু করলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীন প্রস্তুত। তবে এ ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশকেই।
বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে তিন বছর ধরে ২০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে তিস্তা নদীতে মহাপরিকল্পনার সমীক্ষা করে চীন। প্রকল্পের চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরিতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছিল দেশটির সমীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান। তবে গত বছর ভারত এই প্রকল্প নিয়ে আপত্তি জানালে শেখ হাসিনার সরকার আর এগোয়নি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সকারের পতন হলে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে নতুন করে দাবি ওঠে। অন্তর্বর্তী সরকারও এ নিয়ে আগ্রহী।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকার তিস্তা প্রকল্পের জন্য চীনের সহায়তা চেয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। প্রকল্পটি মূল্যায়ন করার পর ২০২৩ সালে চীন বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিয়ে জানায়, প্রকল্পে কিছু অপ্রয়োজনীয় উপাদান থাকায় প্রকল্পটি সংশোধন করা উচিত। কিন্তু তারপর থেকে আমরা এখনও বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাইনি।’
এদিকে একই দিন এক অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা করতে আরও দু-বছর সময় দেয়া হয়েছে চীনকে। তবে এ বছরের মধ্যেই পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। তিস্তাপারের মানুষের সঙ্গে কথা বলেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে সরকার।