ঢাকাবুধবার , ১২ মার্চ ২০২৫

ট্যুরিস্ট ভিসায় শ্রমিক:

দুই মাসে ৯০০ জনকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ১২, ২০২৫ ৪:১৯ অপরাহ্ণ । ৩২ জন

মালয়েশিয়া ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে আসা ৯০০ যাত্রীকে বিমানবন্দর থেকেই ফিরিয়ে দিয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাসে, সীমান্ত সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো মোট ২ হাজার ৬৫৪ বিদেশি যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও কাগজপত্র পরীক্ষা করে, এর মধ্যে ৯০০ জনকে অনুমতি না দিয়ে ফেরত পাঠায়। এসব যাত্রী প্রকৃত পর্যটক নয়, তারা ট্যুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চেয়েছিল।

এদের মধ্যে প্রায় ৩৪ শতাংশ যাত্রীকে বিমানবন্দর থেকেই আটক করা হয়, এবং তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি। তারা চাকরির প্রস্তাব নিয়ে মালয়েশিয়ায় এলেও, ভ্রমণ ভিসা বা ট্যুরিস্ট ভিসায় অবৈধভাবে কাজ করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ায় কয়েকটি চক্র এই ধরনের চুক্তি করে এসব যাত্রীদের দেশে পাঠাতে চায়।

শ্রম অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবৈধ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশি ও মালয়েশিয়ার অপরাধ চক্র জড়িত। কিছু সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদেরও এর সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে এবং মালয়েশিয়া সরকার কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেফতারও করেছে। তবে বাংলাদেশে এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

কেএলআইএ বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, আটক হওয়া যাত্রীরা পর্যটক হিসেবে এলেও, তারা সরাসরি ইমিগ্রেশন কাউন্টার না গিয়ে বিমানবন্দরের খাবারের দোকান ও বসার স্থানে ঘোরাফেরা করছিল। কিছু যাত্রী বিশেষ কারো জন্য অপেক্ষা করছিল বলে সন্দেহ করা হয়।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ২৪ জানুয়ারি ১২ বাংলাদেশি যাত্রীকে আটক করা হয়, যারা ভুয়া পরিচয়ে ও ভিন্ন উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করছিল। এছাড়া ২৪ ডিসেম্বরও একদল বিদেশি যাত্রীকে সন্দেহজনক অবস্থায় আটক করা হয়।

বিমানবন্দরের অপারেশন কন্ট্রোল ডেপুটি চিফ সুরেশ নাদারজাহ জানান, আটক যাত্রীরা ইমিগ্রেশন পরিদর্শন এড়িয়ে ‘কাউন্টার সেটিং’ সিন্ডিকেটের সদস্যদের সংকেতের জন্য অপেক্ষা করছিল। তারা অনেক সময় বিমানে নেমে বিমানবন্দরের ভেতরে নানা জায়গায় অবস্থান করছিল, এমনকি কিছু যাত্রী দোকান থেকে পানীয় কিনে দুদিন পর্যন্ত সেখানে কাটিয়ে দেয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে, বিমানবন্দরে ‘কাউন্টার সেটিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে সহায়তা করা সন্দেহে ৫০ জন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া, সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পর্কিত আরও ১০ জন এজেন্টও আটক হয়।

এই ধরনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া সরকারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।