ঢাকাসোমবার , ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

বীরকন্যা প্রীতিলতার আত্মাহুতি দিবস স্মরণে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের পুষ্পার্ঘ অর্পণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩ ১০:৩০ অপরাহ্ণ । ২৭৫ জন

বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর ৯১তম আত্মাহুতি দিবস স্মরণে গতকাল ২৪ আগস্ট ২০২৩ সকাল ৯টায় ইডেন কলেজ প্রাঙ্গণে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের উদ্যোগে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়। কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রুখশানা আফরোজ আশা, ঢাকা নগর কমিটির দপ্তর সম্পাদক লাবনী আক্তার, অর্থ সম্পাদক সেলিনা হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খাদিজা রহমানসহ নেতৃবৃন্দ।

বীরকন্যা প্রীতিলতা ১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের ধলঘাটে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রামের ড. খাস্তগীর স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে ঢাকার ইডেন কলেজে আই. এ ভর্তি হন। এখানে তিনি বিপ্লবী নারী সংগঠন দীপালি সংঘের সাথে যুক্ত হন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে ভাইদের পাশাপাশি বোনেরাও অংশগ্রহণ করতে পারে এই মন্ত্রে নারীদের উদ্বুদ্ধ করে তোলেন। বেথুন কলেজ থেকে পড়া শেষ করে একদিকে চট্টগ্রামের অপর্ণাচরণ হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন অন্যদিকে মাষ্টারদা সূর্যসেন এর অধীনে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সরাসরি যোগদান করেন। ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে মাত্র ৭ জন সঙ্গী নিয়ে পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ব্রিটিশেরা যেখানে সাইনবোর্ডে লিখে দিয়েছিল ‘কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ’। সফল আক্রমণ শেষে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। জীবিত ধরা না পড়ার পূর্ব পরিকল্পনায় অবিচল থেকে তিনি পটাশিয়াম সায়ানাইড পান করে আত্মাহুতি দেন।

ব্রিটিশ সা¤্রাজ্যের সূর্য অস্তমিত করা ও স্বাধীনতা সংগ্রামে পুরুষের পাশে নারীরাও লড়াই করতে পারেন-এ চেতনা জাগাবার জন্যে মাস্টারদা বেছে নিয়েছিলেন প্রীতিলতাকে। প্রীতিলতাও গ্রহণ করেছিলেন জীবন দিয়ে জীবন জাগাবার মন্ত্র। মাত্র একুশ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনে জাগিয়ে তুলেছিলেন ভারতবাসীকে, নারীদের সম্পর্কে সমাজের সংস্কারে করেছিলেন প্রচন্ড আঘাত। ইতিহাসের সংগ্রামী চেতনা, অতীতের বড় চরিত্র বর্তমান সংগ্রামে পথনির্দেশ করে। প্রীতিলতাসহ অগ্নিযুগের অগ্নি সন্তানেরা নতুন প্রজন্মকে সংগ্রামী মানুষ হতে শেখায়, অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করা নয়, অন্যায়কে রুখে দিতে শেখায়।

আজ থেকে ৯১ বছর আগে প্রীতিলতা যে স্বাধীনতা, শোষণমুক্তি ও সা¤্রাজ্যবাদী শৃংখল মুক্তির জন্য নির্ভিক চিত্তে জীবন দিয়েছিলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও মানুষ পুঁজিবাদী-সা¤্রাজ্যবাদী শোষণ লুন্ঠনের যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছে, দেশের সকল প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি-দখলদারিত্ব-দলীয়করণে নিমজ্জিত, নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা বেড়েই চলেছে, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছোয়া, শিক্ষা-চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে হিমসিম খাচ্ছেন অভিভাবকরা, বেকার সমস্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এমন দেশ পাওয়ার জন্য কি প্রীতিলতা আত্মাহুতি দিয়েছিলেন? এখনকার তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব হল একে পাল্টানোর জন্য লড়াই করা।