জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ‘যায় যায় দিন’ এর ৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে ‘ডিপ্লোমেটিকের আড়ালে জিন এয়ারের বাণিজ্যিক ফ্লাইট’ ও দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার ৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে ‘৫৫ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি – জিন এয়ারের বাণিজ্যিক ফ্লাইট ‘ শিরোনামের সংবাদ দুটিকে অসত্য উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
প্রতিবাদে বলা হয়েছে, উক্ত প্রতিবেদনে অসত্য তথ্য উপস্থাপনের ফলে মন্ত্রণালয় এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। দৈনিক ‘যায় যায় দিন’ ও দৈনিক ‘জনকন্ঠ’ এর মত স্বনামধন্য পত্রিকায় এ ধরণের অসত্য ও ভ্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হওয়া দুঃখজনক। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সমুন্নত রাখার স্বার্থে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনটির বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করা যুক্তিসঙ্গত বলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় মনে করে। মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা নিম্নরূপ-
ঢাকা-ইনচন-ঢাকা রুটে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সময় হতে বিগত ৩ (তিন) বছর পর্যন্ত জিন এয়ার রিপ্যাট্রিয়েশন ফ্লাইট পরিচালনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরাসরি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিকট হতে অনুমতি গ্রহণ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বর্ণিত যোগাযোগের কোন অনুলিপি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ না করায় জিন এয়ারের ফ্লাইটের বিষয়ে এ মন্ত্রণালয়ের কোন কর্মকর্তার বর্ণিত বিষয়ে অবহিত হওয়ার কোন সুযোগ ছিলো না। ফলে জিন এয়ারের পক্ষে মন্ত্রণালয় হতে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্তৃক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিকট কোন রকম যোগাযোগ/তদবির করার বিষয়টি অবান্তর। তদুপরি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত গত ৩০ আগস্ট ২০২৩ তারিখের সভায় জিন এয়ার কর্তৃক এ মন্ত্রণালয়কে অবহিত না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরাসরি বেবিচক হতে অনুমোদন গ্রহণের দ্বারা রিপ্যাট্রিয়েশন ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়টি নজরে আসলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিপ্লোমেটিক ফ্লাইট ব্যতিত নন সিডিউল/ চাটার্ড ফ্লাইটের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে বেবিচক মন্ত্রণালয়ের সাথে পরামর্শক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়া, এ মন্ত্রণালয় হতে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত EPS কর্মীদের পরিবহণের সুবিধার্থে কেবল মাত্র গত ২৩ ও ৩০ অক্টোবর এবং ৬ নভেম্বর- ২০২৩ তারিখে নন-সিডিউল বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য অনুমতি প্রদানের জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বোয়েসেল এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ইপিএস কর্মীগণ জিন এয়ারের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় গমন করেন। গত ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখের নন-সিডিউল বাণিজ্যিক ফ্লাইটটিতে ৬৫ জন EPS কর্মী, ৩০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখের নন-সিডিউল বাণিজ্যিক ফ্লাইটটিতে ১৬ জন EPS কর্মী এবং ৬ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখের নন-সিডিউল বাণিজ্যিক ফ্লাইটটিতে ২৫ জন EPS কর্মী কোরিয়ায় গমন করেছেন, যাদের নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে গমনের প্রয়োজনীয়তা ছিল। এছাড়াও প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ্যারোনটিক্যাল ও নন-এ্যারোনটিক্যাল চার্জ বাবদ জিন এয়ারের নিকট হতে ৫৫ কোটি টাকা আদায় না হওয়া সংক্রান্ত যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে সেটি সঠিক নয়। বিগত তিন বছরে জিন এয়ারের নিকট হতে এ্যারোনটিক্যাল চার্জ বাবদ ২,০৬,৬৬,৫১৮ টাকা আদায় হয়েছে, যা অন্য যেকোন বাণিজ্যিক ফ্লাইট হতে আদায়কৃত চার্জের সমান। জিন এয়ারের প্রতিটি ফ্লাইট হতে বাণিজ্যিক ফ্লাইটের জন্য প্রযোজ্য হারে এ্যারোনটিক্যাল চার্জ আদায় করা হয়েছে।
প্রতিবাদে আরও বলা হয়েছে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় মনে করে ৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে দৈনিক যায় যায় দিন পত্রিকায় ‘ডিপ্লোমেটিকের আড়ালে জিন এয়ারের বাণিজ্যিক ফ্লাইট’ ও দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার ‘ ৫৫ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি – জিন এয়ারের বাণিজ্যিক ফ্লাইট ‘ শিরোনামে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তা সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও মানদন্ডের সাথে সাংঘর্ষিক। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আশা করে এ ধরনের কোন সংবাদ প্রকাশের ব্যপারে উত্তম চর্চা ও পেশাদার সংবাদিকতায় বিশ্বাসী গণমাধ্যম সর্বদা দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়।