ঢাকাসোমবার , ২০ নভেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

২৮তম বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন

কপ সম্মেলনে এবারে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ২০, ২০২৩ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ । ১৮৮ জন
সভায় বক্তব্য রাখছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, বরাবরের মতো এবারের কপ-২৮ সম্মেলনেও বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল কার্যকর ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। এ সম্মেলনে বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আলোচনায় বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।

সোমবার (২০ নভেম্বর) ২৮তম বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন কপ-২৮ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আগামী ৩০ নভেম্বর হতে ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে ২৮তম বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন কপ-২৮ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আগামী ১ থেকে ২ ডিসেম্বর সম্মেলনের হাই-লেভেল সেগমেন্ট ‘ওয়ার্ড ক্লাইমেট সামিট’, ৮ থেকে ৯ ডিসেম্বর রিজিউমড হাই-লেভেল সেগমেন্ট, ৩০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনিক্যাল নেগোসিয়েশন এবং ১২ ডিসেম্বর তারিখে সমাপনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী। সাথে থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী; প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ দেশের বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।

আলোচনায় জানানো হয়, বাংলাদেশ কপ-২৮-এ ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিষ্পত্তিতে সমন্বিতভাবে কাজ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। সেগুলো হলো :

  1. প্রথম গ্লোবাল স্টকটেক অবশ্যই ১:৫০ সেলসিয়াস তাপমাত্রার লক্ষ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কার্যক্রমের অগ্রগতি মূল্যায়ণ, ভবিষ্যৎ উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং কংক্রিট মাইলফলকসহ সুস্পষ্ট পদক্ষেপ প্রদান করতে হবে;
  2. অধিক বিপদাপন্ন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ এড্রেস করার লক্ষ্যে কপ-২৮-এ ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড অপারেশনালাইজ’ করা এবং এর ‘ডিটেইল এরেঞ্জমেন্ট’ ঠিক করা;
  3. অভিযোজন সংক্রান্ত বৈশ্বিক লক্ষ্য ‘গ্লোবাল গোল অন এডাপটেশন’-এর কাঠামো তৈরি/প্রণয়ণ; সদস্য দেশগুলোকে অবশ্যই ১.৫০ সেলসিয়াস তাপমাত্রার লক্ষ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করার জন্য তাদের NDC-তে বর্ণিত ২০৩০ প্রশমন লক্ষ্যমাত্রাকে শক্তিশালীকরণ এবং NDC বাস্তবায়নের জন্য LDC দেশগুলোকে অর্থায়ন বাড়ানো;
  4. উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান নিশ্চিত করা; জলবায়ু অর্থায়ন-এর সংজ্ঞা চূড়ান্ত করা;
  5. অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করা; জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বন্তবায়ন এবং ২০২৫ পরবর্তী সময়ে জলবায়ু অর্থায়নের জন্য “নিউ কালে কোয়ান্টিফাইড গোল অন ক্লাইমেট ফাইন্যান্স আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অ্গতি অর্জন করা।

সভায় জানানো হয় যে এরই মধ্যে কপ-২৮ সম্মেলনে বাংলাদেশের অবস্থান যথাযথভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মতামত নিয়ে একটি অবস্থানপত্র তৈরি করা হয়েছে৷

কপ-২৮ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ১৩টি সেমিনারসহ ২৪টি সাইড লাইন প্রোগ্রাম আয়োজন করবে। সেখানে শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নয়নশীল দেশের লিডার হিসাবে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব তুলে ধরবে বলে জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণলয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। এছাড়া কপ-২৮ সম্মেলনের রিজিউমড হাই-লেভেল সেগমেন্ট-এর আগে সম্মেলনের ভেন্যুতে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হবে।

বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমানের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকসহ আরো অনেকে।