‘স্টপ’ ও ‘গ্লোবাল সেন্টার ফর গুড গভার্নেন্স ইন টোব্যাকো কন্ট্রোল (জিজিটিসি)’-এর বৈশ্বিক তামাক হস্তক্ষেপে সূচক ২০২৩ প্রকাশিত হয়েছে। নিচে পুরো প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো।
সারসংক্ষেপ
তামাকশিল্প জনস্বাস্থ্য নীতিনির্ধারণীতে তাদের হস্তক্ষেপ জোরদার করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর অনুচ্ছেদ ৫.৩ ও এর কার্যকরী নিদেশনার আলোকে সরকার তার স্বাস্থ্যনীতি রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা সরকারকে তামাকশিল্প ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য গোষ্ঠীর ব্যবসায়িক এবং অন্যান্য কায়েমি স্বার্থ হতে জনস্বাস্থ্যনীতিকে সুরক্ষা দেওয়ায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করে।
তামাকশিল্প ও তার মিত্রেরা সরকারের ইতোমধ্যে নেওয়া প্রতিরক্ষামূলক-নীতি প্রতিরোধ এবং অবমূল্যায়িত করতে বেশ কিছু কূটকৌশলের প্রয়োগ যেমন ঘটিয়েছে, তেমনি অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যহত ও নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা চালিয়েছে। অনেক সরকার তামাকশিল্পের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়েছে, কেননা তারা শিল্প ও এর কূটকৌশল মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) ৯০টি দেশের তামাকশিল্পের প্রভাব-সংক্রান্ত সুশীল সমাজের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচক প্রণয়ন করে, যা পৃথিবীর ৮৭ শতাংশ জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করে। এই সিরিজের চতুর্থ বারের মতো প্রকাশিত সূচক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি অনুচ্ছেদ ৫.৩ বাস্তবায়নে সরকারের প্রচেষ্টা তুলে ধরেছে।
সূচকটি দেশগুলোতে তামাকশিল্পের হস্তক্ষেপ ও তার বিপরীতে নিজ নিজ সরকারের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে উন্মুক্তভাবে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বানানো। যে ৮০টি দেশ তাদের আগের প্রতিবেদনগুলো হালনাগাদ করেছে, তাদের প্রতিক্রিয়া ও হস্তক্ষেপ পরিমাপ করা হয়েছে এপ্রিল ২০২১ থেকে মার্চ ২০২৩— এই সময়সীমা পর্যন্ত। নতুন ১০টি দেশের জন্য জানুয়ারি ২০১৯ থেকে মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ ও প্রতিক্রিয়া পরিমাপ করা হয়েছে। সুশীল সমাজের দেওয়া মোট স্কোরের ওপর ভিত্তি করে দেশগুলোর ক্রম (চিত্র ১) সাজানো হয়েছে, যারা নিজ নিজ দেশের সূচকগুলো প্রস্তুত করেছেন। স্কোর যত কম, হস্তক্ষেপের মাত্রা তত কম, যা দেশটির জন্য মঙ্গলজনক।
সূচকটিতে দেখা যায়, হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে অবনতির ধারা চলমান এবং কোনো দেশই এর বাইরে নয়। স্বাস্থ্যনীতি সুরক্ষায়, বিশেষ করে অধিকতর স্বচ্ছতা প্রয়োগে, শিল্পটির সাথে সহযোগিতায় লিপ্ত না হওয়া এবং শিল্পটির সাথে যোগাযোগের প্রক্রিয়া স্থাপনে নীতি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তেতাল্লিশটি (৪৩) দেশের স্কোর নিন্নগামী হয়েছে, যার তুলনায় উন্নতি ঘটেছে ২৯টি দেশের স্কোরে। আটটি দেশের স্কোর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রধান উপলব্ধিগুলো
চার দেশের সরকার তামাকশিল্পের হস্তক্ষেপের হাত থেকে তাদের নীতি-সুরক্ষা নিশ্চিতে অগ্রগতি দেখিয়েছে। বতসোয়ানা আর্টিকেল ৫.৩ নির্দেশনা থেকে সুপারিশগুলো তাদের তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি-২০২১-এ সংযুক্ত করেছে। বসনিয়া ও হারজেগোভিনা, বুরকিনা ফাসো এবং আইভরি কোস্ট শিল্পের হস্তক্ষেপ থেকে সুরক্ষা প্রদানে খসড়া নীতিমালা প্রস্তত করেছে, যা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
অর্থ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিভাগগুলো ক্রমাগত শিল্পের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। অর্থনীতিতে তাদের অবদান অতিরঞ্জনের মাধ্যমে শিল্পটি স্বাস্থ্যসেবা-বহির্ভূত বিভাগগুলো, বিশেষ করে অর্থ, বাণিজ্য এবং শুল্ক বিভাগকে বাগে আনার চেষ্টা চালিয়েছে এবং তারা শিল্পের এই ভাষ্যে আস্থা রেখেছে যে কর বাড়লে অবৈধ তামাক বাণিজ্য বাড়বে।
বেশিরভাগ দেশের পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে এবং তামাকশিল্পের হস্তক্ষেপের শিকার হয়েছে। ২৯টি দেশের উন্নতি ঘটেছে এবং ৪৩টি দেশের অবনতি ঘটেছে, এছাড়া আটটি দেশের স্কোর অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও অনেক সরকার তামাকশিল্প থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মসূচির (সিএসআর) আর্থিক সাহায্য গ্রহণ করেছে। বৈশ্বিক ইস্যু যেমন কোভিভ-১৯-এর অব্যাহত অভিঘাত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এবং প্রাকৃতিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকারগুলো শিল্পের অর্থসহায়তা গ্রহণ করে চলেছে এবং নীতিতে ছাড় দিতে বাধ্য হয়েছে।
সরকার শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া পরিবেশ-শীর্ষক কর্মসূচিতে অংশীদার হয়েছে। তামাকশিল্প পরিচালিত সিগারেটের অবশিষ্টাংশ পরিচ্ছন্নকরণ কর্মসূচিতে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে ব্রাজিল, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও উরুগুয়ে-সহ ১৫টি দেশে।
পাঁচটি দেশের দূতাবাস তামাকশিল্পের প্রচার বা প্রসারে কাজ করেছে। চীন, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং যুক্তরাজ্য— এই পাঁচটি দেশের দূতাবাস অন্য দেশে তামাকশিল্পের প্রচারণা চালানোয় সম্মত হয়।
স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার ঘাটতি রয়ে গেছে। বেশিরভাগ দেশের নেই তামাকশিল্পের সাথে সভা-সমাবেশের তথ্য প্রকাশ-সংক্রান্ত চুক্তি, লবিস্টদের তালিকা যেখানে তামাকশিল্পও অন্তভুক্ত, বা নীতি যা তামাকশিল্পকে বিপণন ও লবিং সম্পর্কে তথ্য প্রকাশে বাধ্য করে।
পাঁচটি দেশের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী তামাকশিল্প, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এফসিটিসির সাথে সর্বাত্মকভাবে সঙ্গতিপূর্ণ বিধান পাসের প্রচেষ্টা ব্যাহত করেছে। বলিভিয়া, গুয়াতেমালা, জ্যামাইকা, তাঞ্জানিয়া ও জান্বিয়াতে গত কয়েক বছর পূর্বে প্রকাশিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের কাজ বিলম্বিত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এফসিটিসির অংশ নয়, এমন পাঁচটি দেশে ব্যাপক হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আর্জোন্টিনা, ডোমিনিকান রিপাবলিক, ইন্দোনেশিয়া, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র অংশী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি দেখায়নি এবং ব্যাপক আকারে লবিং বা হস্তক্ষেপের মুখোমুখি হয়েছে, যা তামাক-নিয়ন্ত্রণ বাধাগ্রস্ত করেছে। এফসিটিসির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, এমন তামাক-নিয়ন্ত্রণ নীতি বাস্তবায়নকারী এসব সরকার নীতি-উন্নয়নে শিল্পের হস্তক্ষেপের সুযোগ দিয়েছে, তামাকশিল্পকে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে বা তামাকশিল্পের কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিয়েছে
আর্টিকেল ৫.৩ নিয়ে দেশগুলোর সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক ধারাবাহিক কর্মসূচি সংক্রান্ত সামান্য তথ্যই জনসসক্ষে প্রকাশিত। এই সূচকের অন্তভুর্ত গুটিকয়েক দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে তামাকশিল্পের আর্টিকেল ৫.৩ সম্পর্কিত কৌশল ও নীতি সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ানোতে অভ্যন্তরীণভাবে নেওয়া কর্মসূচির প্রতিবেদন উন্মুক্ত আকারে পাওয়া যায়।
সুপারিশগুলো হলো
সরকারের পক্ষে এটা সম্ভব এবং অবশ্যই করণীয় হলো শিল্পের হস্তক্ষেপে লাগাম টানা। যত দ্রুততার সাথে তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এফসিটিসি বাধ্যবাধকতা বাস্তবায়নের পথে এগোবে, তত দক্ষতার সাথে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি সুরক্ষা ও অগ্রসরের পথে এগোনো যাবে। আর্টিকেলের ৫.৩ নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারকে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি তখনই শিল্পের সাথে যোগাযোগ হ্রাসে বলা হয়েছে যখন তা অত্যন্ত জরুরি হয়ে ওঠে। নির্দিষ্ট পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে :
১। পুরো সরকারকে তামাকশিল্পের হস্তক্ষেপ কমাতে নিয়োজিত করতে হবে। পুরো সরকারকে অবশ্যই তামাকশিল্পের হস্তক্ষেপ রোধে ও আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে সমম্বিতভাবে কাজ করতে হবে, যার দৃষ্টান্ত দেখা গেছে বতসোয়ানা, চাদ, ফিলিপাইন, যুক্তরাজ্য ও উগান্ডার নেওয়া পদক্ষেপে।
২। তামাকশিল্পের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত দাতব্য কাজে অংশগ্রহণে বিরত থাকতে হবে। সরকারের উচিত নয় শিল্পের পৃষ্টপোষকতাপ্রাপ্ত কর্মকাণ্ডের প্রচার করা বা তাতে অংশ নেওয়া। বরং তামাকশিল্পের সাথে তাদের যোগাযোগ শুধু হওয়া উচিত বিধি বাস্তবায়ন ও নিয়ন্ত্রণের কাজে।
৩। তামাকশিল্পের সহায়তা নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, এমনকী রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রেও। সরকার যখন তামাকশিল্পের অনুদান গ্রহণ করে তখন তারা নিজেদের জন্য বিপদ ডেকে আনে, যার নজির অনেক দেশে স্থাপিত হয়েছে তামাক নিয়ন্ত্রণে ছাড় ও আইন পাল্টে দেওয়ার মাধ্যমে।
৪। তামাকশিল্পের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও অস্বাভাবিকীকরণ করতে হবে। মানবস্বস্থ্য ও পরিবেশের যে ক্ষতি তামাকশিল্পের পণ্যের মাধ্যমে হয়, তার জন্য তামাকশিল্পকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে; বর্ধিত উৎপাদনকারী দায়িত্ব ব্যবস্থা ও কর্পোরেট টেকসই নীতিমালায় তামাকশিল্পকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না বা তাদের প্রতি অন্য শিল্পের জন্য স্বাভাবিক— এমন আচরণ করা যাবে না।
৫। অধিকতর দায়বদ্ধতা বাড়াতে অধিকতর স্বচ্ছতা প্রয়োজন। তামাকশিল্পের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা হস্তক্ষেপের ঘটনা কমাবে এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ও তামাকশিল্পকে দায়বদ্ধ করবে। তামাকশিল্পের সাথে যোগযোগ নথিবদ্ধ করতে হবে এবং তা প্রকাশ্যে আনতে হবে। তামাকশিল্পকে তাদের বিপণন ও লবিং কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে বাধ্য করতে হবে।
৬। তামাকশিল্পে করা বিনিয়োগ থেকে পুঁজি প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর প্রতি আচরণ হতে হবে তামাকশিল্পের অন্যান্য কোম্পানির মতো। তামাক-ব্যবসা থেকে সরকারের পুঁজি প্রত্যাহার তাদের স্বাধীনতা বাড়ায়, যার কারণে তারা মুক্তভাবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়োজিত হতে পারে।
৭। সুরক্ষা-দেয়াল নির্মাণে আচরণবিধি বা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকারের অবশ্য পালনীয়ের মধ্যে রয়েছে তামাকশিল্পের সাথে পারস্পরিক যোগাযোগ সীমিত করতে সুম্পষ্ট নির্দেশনা সম্বলিত আচরণবিধি তৈরি, স্বার্থের সংঘাত এড়ানো এবং যে-কোনো যোগাযোগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়ানো।
৮। তামাকশিল্পকে প্রণোদনা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতির সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক হওয়ায় ব্যবসা পরিচালনার জন্য তামাকশিল্পকে কোনো ধরনের প্রণোদনা বা সুবিধাজনক ব্যবস্থার অনুমোদন দেওয়া উচিত নয়।
৯। তামাকশিল্পকে আইনত বাধ্যকর নয়, এমন চুক্তি বাতিল করতে হবে। সরকার প্রায়ই প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয় যদি তামাকশিল্পের সাথে সহযোগিতায় সম্মত হয়। সরকার ও তামাকশিল্পের কোনো যৌথ কর্মসূচি থাকা উচিত নয়।
সরকারের উচিত তামাক এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পের তামাক-নিয়ন্ত্রণ পথভ্রষ্ট্রের উদ্দেশ্যে নেওয়া কূটকৌশল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা। প্রমাণ-ভিত্তিক তামাক-নিয়ন্ত্রণ নীতি জীবন বাঁচায়, তাই দেশগুলোর সচেতন থাকতে হবে তামাক-নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা ব্যাহতের লক্ষ্যে নেওয়া তামাকশিল্পের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুততা ও দৃঢ়তার সাথে পদক্ষেপ গ্রহণে। তামাকশিল্পের কৌশল মোকাবেলায় সরকারের প্রচেষ্টা বেগবান করতে সুশীল সমাজ হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক অংশীদার।
বিনায়ক মোহন প্রসাদ, ইউনিট প্রধাণ,নো টোব্যাকো ইউনিট, (টিএফআই) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা