নিজেদের দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে পণ্যটি রপ্তানির ওপর আগামী মার্চ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দেশে হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশে পেঁয়াজ নিয়ে ১৩টি পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন।
আজ বুধবার তারা এ পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ দিয়েছে। নিম্নে সেগুলো দেয়া হলো।
১. দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৭-২৮ লক্ষ মে.টন;
২. ২০২২-২৩ অর্থবছরে পেঁয়াজের স্থানীয় উৎপাদন ৩৩.৯ লক্ষ মে. টন। তবে এর মধ্যে ২৫%, সংগ্রহকালীন এবং সংরক্ষণকালীন ক্ষতি বাদ দিলে স্থানীয় উৎপাদিত পেঁয়াজ থেকে বাজারে মোট সরবরাহের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫.৪৯ লক্ষ মে.টন;
৩. ২০২৩ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এর হিসেবে দেশে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ ৫.৮৫ লক্ষ মে.টন যা গতবারের এই সময় অপেক্ষা ২.৫৬ লক্ষ মে. টন বেশী;
৪. স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানি মিলে এ বছর সরবরাহের পরিমাণ ৩০.৭৫ লক্ষ মে.টন (উৎপাদন ও আমদানি থেকে প্রকৃয়াজাতকরণ ক্ষতি বাদে);
৫. স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজ দ্বারা চাহিদার ৬৫% থেকে ৭০% পূরণ করা সম্ভব। সে বিবেচনায় আমদানি নির্ভরতা ৩০-৩৫%;
৬. মোট স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানি গতবারের চেয়ে বেশী হওয়ার পরেও স্থানীয় বাজারে মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে। এ ধরণের প্রবণতা থেকে স্থনীয় উৎপাদন ও চাহিদার তথ্যের সঠিকটা সন্দিহান;
৭. পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি ও সরবরাহ লাইনে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টিতে মৌসুম পূর্ববর্তী (Lean season) সময়ে মজুদ তলানী অবস্থার প্রভাব রয়েছে;
৮. বাংলাদেশে পেঁয়াজের রোপন মৌসুমকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা: খারিফ (আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর) ও রবি (মধ্য ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি) ;
৯. বাংলাদেশে পেঁয়াজের প্রকৃত সংগ্রহ মৌসুম মূলত মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত;
১০. পেঁয়াজ আমদানিতে ৫% কাস্টমস ডিউটি (সিডি) শুল্কসহ মোট ১০% শুল্ক আরোপিত;
১১. পরবর্তী মূল উৎপাদন মৌসুম এখনও প্রায় ৩.৫ মাস বাকি থাকলেও মুরিকাটা পেঁয়াজের উৎপাদন শুরু হয়েছে;
১২. বিদ্যমান মজুদ বিবেচনায় আগত উৎপাদন মৌসুম পর্যন্ত প্রায় ২.৫ লক্ষ মে.টন পেঁয়াজ আমদানির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে;
১৩.বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং আমদানিকৃত প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় দেশি পেঁয়াজে ১৮৯% এবং আমদানিকৃত পেঁয়াজে ১৪৪% বৃদ্ধি পেয়েছে;