ঢাকারবিবার , ১৮ জুন ২০২৩
  • অন্যান্য

আজকের সর্বশেষ সবখবর

যক্ষ্মা নির্মূলে ২২ এমপির অংশগ্রহণে ‘টিবি ককাস’ গঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জুন ১৮, ২০২৩ ৩:০১ অপরাহ্ণ । ৪৯৯ জন

বাংলাদেশে যক্ষ্মা নির্মূলে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বৃদ্ধি এবং যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তদের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে নীতি-নির্ধারনীমূলক উদ্যোগ গ্রহনের লক্ষ্যে ২২ জন সংসদ সদস্যের অংশগ্রহনে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি টিবি ককাস’ গঠিত হয়েছে।

আজ রবিবার (১৮ জুন ২০২৩) সকালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মেম্বার’স ক্লাবে যক্ষ্মা নির্মূলে সংসদীয় ককাস গঠন বিষয়ক এক সভায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার মোঃ শামসুল হক টুকু এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি টিবি ককাস’ এর সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। এতে অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপিকে সভাপতি ও জনাব আরমা দত্ত এমপিকে সাধারণ সম্পাদক করে পার্লামেন্টারি টিবি ককাস গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার মোঃ শামসুল হক টুকু এমপি বলেন, “বর্তমান সরকার যক্ষার নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করে আক্রান্তদের ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছে। সরকার যক্ষা নির্মূলে খুবই আন্তরিক, একই সাথে জনগণকেও যক্ষা নির্মূলে সরকারের প্রদত্ত ফ্রি সেবা গ্রহণ করতে হবে এবং সচেতন হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যক্ষায় মৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে চায়। এ লক্ষ্যে যক্ষা নির্মুলে ‘সংসদীয় ককাস’ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।”

অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশের ৩ লক্ষ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ যক্ষ্মার জীবাণুতে আক্রান্ত যার মধ্যে ৩০ হাজারই শিশু। প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সংক্রামক, মাতৃত্বকালীন, নবজাতক এবং পুষ্টিজনিত রোগে মৃত্যুর কারণগুলোর মধ্যেও যক্ষ্মা তৃতীয়।” তিনি আরও বলেন, “এসডিজি-৩ অর্থাৎ ‘সকল বয়সী সকল মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণে’ যক্ষ্মা প্রতিরোধ অত্যন্ত জরুরী। সেই লক্ষ্য অর্জনে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে যাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করা যায়।”

সভায় উপস্থিত অন্যান্য সংসদ সদস্যরা বলেন এখনো মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হলেও যক্ষ্মার স্বাস্থ্যসেবা যে বিনামূল্যে পাওয়া যায় তা অনেকেই জানে না। যক্ষ্মা মোকাবিলায় সরকার বা যক্ষ্মা নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থার পাশাপাশি সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কৌশলপত্র অনুযায়ী, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে যক্ষ্মায় মৃত্যু ৭৫ শতাংশ (২০১৫ সালের তুলনায়) এবং সংক্রমণ ৫০ শতাংশ (২০১৫ সালের তুলনায়) কমাতে হবে। সে হিসেবে আগামী দুই বছরের মধ্যে বছরে যক্ষ্মায় মৃত্যু ১৮ হাজারে নামিয়ে আনতে হবে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা থেকে দেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। সেই লক্ষ্য অর্জনে এবং বাংলাদেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূলে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি টিবি ককাস’ সংসদ সদস্যদের একটি জাতীয় নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করবে যারা রাজনৈতিক সদিচ্ছা গড়তে ভৌগলিক এবং রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতিতে কাজ করবে, যক্ষ্মা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সুশীল সমাজ এবং সংশ্লিষ্ট সহযোগীদের সহায়তা প্রদান করবে, এবং যক্ষ্মা রোগ সম্পর্কিত ভ্রান্ত ধারণা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা প্রতিরোধে কাজ করবে।

সভায় সংসদ সদস্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডাঃ আ. ফ. ম. রুহুল হক এমপি, ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি,  লুৎফুন্নেসা খান এমপি,শামসুন্নাহার এমপি, আহমেদ ফিরোজ কবির এমপি, ফখরুল ইমাম এমপি, পঙ্কজ নাথ এমপি,ফেরদৌসী ইসলাম এমপি,নুরুন্নবী চৌধুরী এমপি,শবনম জাহান এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমেদ এমপি,বাসন্তী চাকমা এমপি, আরমা দত্ত এমপি,অ্যাড. শামীমা আক্তার খানম এমপি,অ্যাড. গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, অ্যাড. আদিবা আনজুম মিতা এমপি, বেগম রওশন আরা মান্নান এমপি, বেনজীর আহমেদ এমপি,এবং  নার্গিস রহমান এমপি। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন টিবি-এল এন্ড এএসপি’র লাইন ডিরেক্টর ডা: মো: মাহাফুজার রহমান সরকার, আইসিডিডিআর’বির সিনিয়র টিবি মিটিগেশন এন্ড কোর্ডিনেশন এডভাইজার ডা. আজহারুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরামের ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং-এর সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী সংস্থা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডাঃ নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ এবং পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ও প্রিপ ট্রাস্টসহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তা,সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।