ঢাকাবুধবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অন্যান্য

ওষুধসহ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ক্যাবের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪ ২:৪৫ অপরাহ্ণ । ৭৬ জন
আসন্ন রমজানসহ সব সময়ের জন্যে ওষুধসহ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি করে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা জাতীয় এ সংগঠনটি। এসময় দেশের সকল ক্ষেত্রে নিত্যপণ্যের উর্ধ্বমুখীর কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানান বক্তারা। মানববন্ধবে বক্তব্য রাখেন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূইয়া, কোষাধক্ষ ড. মঞজুর-ই খোদা সহ ক্যাবের সদস্যরা।

এসময় গোলাম রহমান বলেন, বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সকল পণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। এর ফলে সব ধরনের ভোক্তারা বিশেষ করে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবৃত্ত ভোক্তারা কঠিন সময় অতিবাহিত করছে। ভোক্তাদের নাভিশ্বাস দিন দিন বাড়ছে। একদিকে সরকার বলছে দেশে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের যথেষ্ট মজুদ আছে, দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। অন্যদিকে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এলসি সংকট, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি কথা অসাধু ব্যবসায়ী বারবার বলে আসছেন। আর এর আড়ালে বাজার কারসাজি বা সিন্ডিকেট তৈরি করে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করছে তারা।

তিনি আরও বলেন, চাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজ, আলু, মসলা, আটা-ময়দা, বোতলজাত পানি, ডিম, মাংস কোনো ব্যবসাই এখন আর সিন্ডিকেটের বাইরে নেই। একেক সময় একেক সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ভোক্তাদের নিকট হতে কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠন করা হচ্ছে। এছাড়া হাত বদল হয়েও পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ক্যাব মনে করে বাজারের এই অবৈধ সিন্ডিকেট ভাঙ্গার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে করতে হবে। তা না হলে সিন্ডিকেটের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। এর ফলে অসহায় ভোক্তাদের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।

এডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূইয়া বলেন, ইতোপূর্বে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয়া হলেও বাজারে থাকা ৯০ শতাংশের বেশি ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন আবারো নতুন করে ওষুধের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেশ কিছু ওষুধের দাম এক লাফে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা ওয়াসাও পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রস্তাব করা হয়েছে এলাকাভেদে ঢাকায় ২৪-১৪৭ শতাংশ পানির দাম বৃদ্ধির। দুর্নীতি, অযৌক্তিক ব্যয়, অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে ঢাকা ওয়াসা তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে পানির দাম বৃদ্ধি যৌক্তিক হতে পারে না। এ খাতকে জনকল্যাণমুখী করার জন্য পানির মতো পণ্যকে সেবা হিসেবে সরকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

এসময়ে বক্তারা আরও বলেন, ‘ভোক্তা শ্রেণি’ দেশের সর্ব বৃহৎ অর্থনৈতিক গোষ্ঠী। প্রতিবেশী দেশ ভারত ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও কল্যাণে ১৯৯৭ সালে একটি স্বতন্ত্র ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করেছে। একজন মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে দুইটি বিভাগ নিয়ে গঠিত এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। সরকার প্রতিনিয়ত নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের সিদ্ধান্ত ভোক্তাদের ওপর কি প্রভাব ফেলবে সে বিবেচনা উপেক্ষিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় ভোক্তা-স্বার্থ বিবেচনা, সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ভোক্তাদের স্বার্থের বিষয়টি তুলে ধরা, ভোক্তা-স্বার্থ সংরক্ষণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যক্রমে সমন্বয় সাধন, ভোগ্যপণ্যের চাহিদা, উৎপাদন, আমদানির সঠিক পরিসংখ্যান সংরক্ষণ এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল থেকে দরিদ্র, স্বল্প আয় এবং নিম্ন মধ্যবিত্তের ভোক্তারা যাতে বঞ্চিত না হোন সে লক্ষ্যে জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে রাখার উদ্দেশ্যে অন্তত ১৫ থেকে ২০টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব অর্পণ করে অবিলম্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি পৃথক বিভাগ অথবা একটি স্বতন্ত্র ‘ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি করছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।