ঢাকারবিবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধ করে দিন, নইলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিব – স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪ ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ । ১৫১ জন
কক্সবাজারের সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঝটিকা অভিযানে বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ করেই অনির্ধারিত একটি অভিযানে কক্সবাজারের বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ‘ইউনিয়ন হাসপাতাল লি.’ এবং এর পরই অনির্ধারিত আরেকটি অভিযানে কক্সবাজার আড়াইশ বেডের সরকারি সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) মইনুল হোসেন এবং চট্রগ্রাম সিভিল সার্জন এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন।

কক্সবাজারের আড়াইশ বেডের সদর হাসপাতাল সংলগ্ন বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইউনিয়ন হাসপাতাল লি: পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেখানকার বেশ কিছু অনিয়ম দেখতে পান। হাসপাতালটিতে আইসিইউ, সিটি স্ক্যান চিকিৎসা ব্যবস্থার অনুমোদন না থাকলেও সেখানে আইসিইউ ও সিটি স্ক্যান ব্যবস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে দেখতে পান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স অনুপস্থিত দেখতে পেয়ে হাসপাতালের ম্যানেজারের কক্ষে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ম্যানেজারকে ধুমপানরত অবস্থায় দেখতে পান। হাসপাতালের অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভালো না থাকার পরও সেখানে অনেক রোগীর ভর্তি দেখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিষ্ময় প্রকাশ করেন এবং বলেন, “একটি বেসরকারি বি ক্যাটেগরির হাসপাতালে ডাক্তার নেই, নার্স নেই, ম্যানেজার নিজেই ধুমপান করেন অথচ সেই হাসপাতালে রোগী এত ভর্তি হলো কী করে সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। এর সাথে, অবৈধভাবে এখানে আইসিইউতে রোগী ভর্তি রাখা হচ্ছে অথচ আইসিইউ অনুমোদন নেই, আইসিইউ চালানোর দক্ষ লোকবল নেই। এসব অনিয়ম দেশের সর্বত্রই এতদিন করা হলেও এখন থেকে আর কেউ পার পাবে না। এসব অবৈধ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মালিকদের নিজ নিজ অবৈধ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখতে আমি প্রথমে বুঝিয়ে বলেছি। কেউ শুনেছে কথা, কেউ শোনেনি। আমি আবারো তাদেরকে অনুমোদনহীন অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করে দিতে অনুরোধ করছি। যারা বন্ধ করছে না, আমি এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত উপযুক্ত ব্যবস্থা নিব।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লিখিত বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইউনিয়ন হাসপাতাল লি. এর অবৈধ আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসারত গুরুতর অসুস্থ এক রোগীকে দ্রততম সময়ে পার্শ্ববর্তী সরকারি সদর হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা নেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তৎক্ষনাৎ সাথে উপস্থিত পরিচালক (হাসপাতাল) কে উল্লিখিত ইউনিয়ন হাসপাতাল লি. এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এর কিছু সময় পরই আরেকটি ঝটিকা অভিযানে কক্সবাজারের আড়াইশ বেডের সরকারি সদর হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের কাছে চিকিৎসক, নার্সদের হাজিরা খাতা অনুযায়ী উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। মন্ত্রী হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের সাথে কথা বলেন এবং চিকিৎসার খোঁজ নেন। সরকারি হাসপাতালে সেবা ব্যাবস্থা বৃদ্ধিতে আরো কি করতে হবে সে ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উপস্থিত হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে নির্দেশনা দেন।

উল্লেখ্য, তিন দিন ব্যাপী কক্সবাজার জেলা স্বাস্থ্যসেবা ব্যাবস্থাপনার উন্নয়ন কার্যক্রম এর অংশ হিসেবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। সফরের অংশ হিসেবে আজ সকালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে “চিকিৎসক অধ্যক্ষ সম্মেলন-২০২৪” এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কক্সবাজার জেলার সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহ পরিদর্শনের তারিখ আগামীকাল ১৭ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত থাকলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে হঠাৎ করে আকষ্মিকভাবে স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল অভিযানে নেতৃত্ব দেন।