ঢাকামঙ্গলবার , ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • অন্যান্য

যে অপারেশন করতে দেশের বাইরে গেলে লাগত এক কোটি টাকা, বাংলাদেশে সেটি করা হয়েছে বিনামূল্যে”- স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪ ৩:৪৪ অপরাহ্ণ । ১৪৭ জন

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, “চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনার দেশ। আমাদের দেশে প্রচুর শিক্ষার্থী প্রতিবছর মেডিকেল পড়ালেখা শেষ করে চিকিৎসক হচ্ছেন। আমাদের চিকিৎসকরা যেমন মেধাবী তেমন দক্ষ। শুধু একটু সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে এবং তাদেরকে দায়িত্ব অনুযায়ী ভরসা দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাহলে বাংলাদেশ থেকে কোন রোগীকে আর আগামীতে বিদেশ যেতে হবে না। কিছুদিন আগেই আমরা ভুটানের ক্যান্সার আক্রান্ত এমন এক মেয়েকে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করেছি যার চিকিৎসা ভারত ও ব্যাংককেও সম্ভব হয় নাই। কাজেই বাংলাদেশ পারে না এমন কোন কাজ নাই। বাংলাদেশেই এখন সব রোগের চিকিৎসা সুবিধা আছে।

আজ বিএসএমএমইউতে নাভা ও নোভা নামের দুটি শিশুর জোড়া মাথা আলাদা করার অপারেশন সাকসেসফুল হলো। এটি সাধারণ কোন কাজ নয়। এখানে আমাদের অভীজ্ঞ বড় একটি চিকিৎসক টিম একটানা ১৩ ঘন্টার বেশি সময় অপারেশন করে এই অসাধ্য কাজ সাধন করেছেন। এই অপারেশন ভারত বা বাইরের দেশে করতে গেলে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হত। কিন্তু বাংলাদেশে এই দুই অবুঝ শিশুর চিকিৎসা ব্যয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাকে এখানে আসতে বলেছেন। এর আগেও বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরাই মাথা জোড়া লাগা শিশুর সফল অপারেশন করেছি। সুযোগ পেলে আমরা যে আসলেই পারি এগুলো কাজ হচ্ছে তারই প্রমান। চিকিৎসাক্ষেত্রেও আমরা দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছি। আমি বলতে পারি, দায়িত্ব নিয়ে আমরা চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিলে বাংলাদেশ থেকে এখন জটিল সব রোগেরই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।”

আজ ২০ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লোকের ১০ম তলায় নাভা ও নোভা নামের দুই শিশুর জোড়া মাথার সফল অস্ত্রোপচার শেষে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন।

বিএসএমএমইউ এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ, নাভা-নোভার মা সহ অন্যান্য সিনিয়র চিকিৎসক বৃন্দ এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথেই ছিলেন।

অন্যদিকে, আজ ২০ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার, সকাল ১০ টায়, সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দফতরে অন্য আরেকটি প্রগ্রামে বাংলাদেশে এইডস, যক্ষা, ম্যালেরিয়া রোগ নির্মূলে অর্থায়ন আরো বৃদ্ধি করার আশ্বাস দিয়েছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সব থেকে বড় দাতা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফান্ড।

আজ গ্লোবাল ফান্ডের জ্যেষ্ঠ ফান্ড বণ্টন দফতর ব্যবস্থাপক MS. GYONGYVER JAKAB গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সাথে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে অর্থায়ন বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এসময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর আহমেদুল কবীর, এবং গ্লোবাল ফান্ডের প্রগ্রাম কর্মকর্তা Mr. Jamts Wariero উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে গ্লোবাল ফান্ডের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে এইডস, যক্ষা ও ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধে ফান্ডিং বৃদ্ধি করা বিষয়ে আলোচনা হয়। এসময় গ্লোবাল ফান্ড প্রতিনিধিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন জানান, বাংলাদেশ চিকিৎসা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এইডস রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও যক্ষা ও ম্যালেরিয়া নির্মূলে অনেক কাজ করার রয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি দেশব্যাপী বার্ণ বা পোড়া অনেক রোগীর নানাবিধ চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল হওয়ায় যক্ষা ও ম্যালেরিয়া নির্মূলের সাথে স্বাস্থ্যখাতের অন্যান্য সেবাখাতে অর্থায়ন বৃদ্ধি করা হলে এই রোগগুলো বাংলাদেশ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যেই যেমন নির্মূল করা সম্ভব হবে, একইসাথে অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের মানও বেড়ে যাবে।

এক্ষেত্রে গ্লোবাল ফান্ডের জ্যেষ্ঠ ফান্ড বণ্টন দফতর ব্যবস্থাপক MS. GYONGYVER JAKAB স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেনকে অর্থায়ন আরো বৃদ্ধি করা বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস দেন।