ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৪ মার্চ ২০২৪
  • অন্যান্য

ট্যানারি থেকে ক্যানসারের উপাদান ক্রোমিয়াম নির্গত হচ্ছে : পরিবেশমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ১৪, ২০২৪ ৩:৪১ অপরাহ্ণ । ১৩০ জন

হাজারিবাগে যখন ট্যানারি ছিল, তখন আশপাশের নদীগুলোকে মৃত করলাম। এখন সেটা যেখানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, সেখানকার আশপাশের নদীগুলোকে শেষ করছি। কাজেই এখানে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আসা দরকার বলেনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। আজ (১৪ মার্চ) বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি ও ডাকা কলিংয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, সেখানে (ট্যানারি) বিশেষ করে আমরা যেটা বলি, ক্রোমিয়ামের যে বিষয়টা আছে, যেটা ভারী ধাতু, যেটার কারণে ক্যানসার হয়, মানুষ মারা যায়। সেই ক্রোমিয়াম আমাদের ট্যানারি থেকে বের হয়ে আসছে। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা এতো বড়ো একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করলাম, হাজারিবাগ থেকে এটা স্থানান্তর করলাম। হাজারিবাগে যখন এটা ছিল, তখন আশপাশের নদীগুলোকে মৃত করলাম। এখন সেটা যেখানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, সেখানকার আশপাশের নদীগুলোকে শেষ করছি। কাজেই এখানে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আসা দরকার। ইনশাআল্লাহ সেটা আমরা করব,’ যোগ করেন তিনি।

‘একটা ট্যানারিতে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো সুযোগ থাকবে না, এটা হতে পারে না। আমাদের ট্যানারিতে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কিছুই নেই’, বলেন তিনি।

ট্যানারির বর্জ্য আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এতদিন শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বলা হতো, সেখানে দূষণ হচ্ছে না। কিন্তু তারাও এখন বুঝতে পেরেছেন, কারণ আমরা সেখানে দেখে এসেছি। আগে আমরা যখন এ নিয়ে বলতাম, তখন মনে হতো, আমরাই অপরাধী। কারণ পরিবেশ মানেই এসব কথা বলবে। কিন্তু এখন সমস্যা যে আছে, সেটা স্পষ্ট হয়েছে। বর্জ্য থেকে আমরা যদি সার তৈরি করতে পারি, তাহলে প্রতি বছর আমরা যে পরিমাণ সার আমদানি করি, সেটা আমদানি না করে স্থানীয়ভাবে বর্জ্য থেকে তৈরি করতে পারব।’

একটা হচ্ছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সার্বিকভাবে সেটাকে কীভাবে উন্নত করা যায়, কার্যকর করা যায়, সেটাও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। আরেকটা হচ্ছে, আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে বর্জ্য ব্যবহার করতে পারি, সেটাকে সম্পদে রূপান্তর করছি। এতে আমাদের অনেক বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। সার আমদানি কমার বলেছেন, এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সার আমদানির যে স্পেসিফিকেশন আছে, সেটার সাথে আমরা স্থানীয়ভাবে যেটা উৎপাদন করি, সেটার মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কিনা, সেটা দেখব। কেন না আমদানির ক্ষেত্রে আমরা জানি, যারা সাপ্লাই করেন, তাদের স্বার্থ থাকে।

‘তারা স্পেসিফিকেশন একভাবে তৈরি করে নেন। আমরা দেখব, বাংলাদেশে আমরা যে মানটা পাচ্ছি, সেটা যদি বিএসটিআই অনুমোদন দেয়, কৃষি মন্ত্রণালয় যদি উপযোগী মনে করি, তাহলে আমদানি কেন করব? আমরা স্থানীয়ভাবে বর্জ্যটাকে সারে রূপান্তর করব। এটা এখন পরীক্ষামূলক হচ্ছে, খুবই ছোটমাপে।’
পণ্য থেকে যে বর্জ্য হয়, সেটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব উৎপাদনকারীদের জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, আমরা এটা নিয়েও ভাবছি। এরইমধ্যে একটা গাইডলাইন তৈরি করে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলাপ করেছি। আমরা একতরফা একটা নীতিমালা তৈরি করতে চাই না। যেকারণে শিল্পখাতের সঙ্গে আলোচনা করে যেটা বাস্তবিক, সেটাই আমরা করব।