যেকোনও ধরনের বড় দুর্ঘটনা ঘটার আগেই নিজেদের সুরক্ষায় আরও গুরুত্ব দিতে হবে এবং মানুষকে সচেতন করতে না পারলে ১০টা বার্ন হাসপাতাল করেও মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারবো না বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গত (১৭মার্চ) রবিবার দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের গ্রাউন্ড ফ্লোরে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সিপিআর সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি’ বিষয়ক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, বেইলি রোডের দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের শরীর পোড়েনি। তারা শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। সে সময় তাদের যদি উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া যেত, তাদের অনেকেই বেঁচে যেতেন। যেকোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি যেকোনও স্থানেই মানুষ অসুস্থ হতে পারে, হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ জন্য সিপিআর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সিপিআর শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে সারা দেশে কীভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায়, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করবো। সিপিআর বিষয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সঙ্গে সরকার কাজ করবে। এই কর্মসূচি আমরা যত করতে পারবো, ততই মানুষের উপকার হবে। চিকিৎসকদের প্রধান কাজ হচ্ছে মানুষকে সচেতন করা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আজ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সিপিআর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অত্যন্ত মহৎ কাজের আয়োজন করেছে। এমন আয়োজনের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। সচেতনতার কোনও বিকল্প নেই। আমি জেনেভায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিকেও বলেছি, আমাদের দেশে সচেতনতায় বেশি জোর দিতে হবে।
এসময় বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশ স্বাধীন না হলে আমরা কেউ এখানে থাকতে পারতাম না। দেশ স্বাধীন না হলে আমার মতো সামন্ত লালের জীবন উজিরপুরেই শেষ হয়ে যেত। আমাদের মধ্যে যদি ন্যূনতম মনুষ্যত্ববোধ থাকে তাহলে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা উচিত।
স্বাচিপ সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। সঞ্চালনা করেন স্বাচিপের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ।
এসময় ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অনেকেই হয়তো সিনেমা ভিডিওতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়া মানুষের বুকের উপর উঠে চাপাচাপি করার পর জ্ঞান ফিরে পাওয়ার দৃশ্য দেখেছেন। এটিকে কার্ডিও-পালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) বলা হয়। এটি জানা থাকলে আশেপাশে হার্ট অ্যাটাক, হার্ট বিট বা নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়া যে কারো জীবন বাঁচানো যেতে পারে। আর এটি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতেই আমাদের এই আয়োজন। আমরা পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এই সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চাই। এর জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টতা প্রয়োজন। সরকারের সহযোগীতা থাকলে সারাদেশেই আমাদের কার্যক্রম চালানো সম্ভব। যেহেতু এত বড় কার্যক্রম চালানোর জন্য অর্থের প্রয়োজন স্বাচিপের একার পক্ষে যা সম্ভব নয়।