ঢাকাশুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪
  • অন্যান্য

তরুণদের সুরক্ষায় চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্য বন্ধের অঙ্গীকার প্রযোজক, পরিচালকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৫:৪৩ অপরাহ্ণ । ৩০৪ জন

শক্তিশালী বিনোদন মাধ্যম চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্য পরিহার করে তরুণদের জন্য আরো ইতিবাচক বার্তা প্রদানের অঙ্গীকার করেছেন খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক পরিবেশকরা। চলচ্চিত্র বিনোদনের পাশাপাশি শিক্ষার একটি অনুকরণীয় উপাদান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও আইন প্রতিপালনে সচেষ্ট থাকতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ বিএফডিসি’র মান্না ডিজিটাল কমপ্লেক্স এ মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন এর সহায়তায় আয়োজিত ‘চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্যের বাধ্যবাধকতা ও আইনের কার্যকারিতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় মানসের প্রকল্প সমন্বয়কারী উম্মে জান্নাত বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং সিনেমা, নাটক বা প্রামাণ্য চিত্রে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য প্রচার, প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও চলচ্চিত্রে, পোস্টার, থাম্বেল ও ট্রেলারে প্রধান চরিত্র দ্বারা ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত ওয়েবসিরিজগুলোতেও ধূমপানের দৃশ্য চলছে দেদারছে। কিশোর-তরুণরা অনুকরণ করতে পছন্দ করে। সেলিব্রেটি তারকাদের হাতে সিগারেট কিশোর-তরুণদেরকে ধূমপানে প্ররোচিত করছে, যা উদ্বেগজনক!

জনস্বাস্থ্য নীতি বিশেষজ্ঞ এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, নাটক, সিনেমার স্বার্থ রক্ষায় ধূমপান প্রমোট করে তরুণ প্রজন্ম ধ্বংস করা হচ্ছে। আমাদের সুস্থ বিনোদন প্রয়োজন। ধূমপানের মতো সমাজের ক্ষতি করে, এমন বিষয়গুলো আমরা মেনে নিতে পারি না।

বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, চলচ্চিত্রে তামাকের দৃশ্য না রেখেও ভালো চলচ্চিত্র তৈরি করা সম্ভব আমাদের চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজকগন কে এই বিষয়টির দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। ধূমপানের দৃশ্য না রেখেও ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যায়।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহিন সুমন বলেন, পরিবারের মাঝে সবার আগে সচেতনতা শুরু করতে হবে। কারন পরিবার মানুষের প্রথম শিক্ষাঙ্গন। আজ চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক সমিতির এই পরিবার থেকে যেন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা যায় আমাদের সকলকে সেই প্রচেষ্ঠা রাখতে হবে।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন বলেন, কেন তরুনরা তামাক ব্যবহার করছে এই বিষয়ে গবেষণা প্রয়োজন। চলচ্চিত্রে সুস্থ ও স্বাভাবিক বিনোদন এর মাধ্যমে সকলের কাছে পৌছে দিতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং চিত্রনাট্যকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করতে পারে।

ও মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুাক্তযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী সভাপতির বক্তব্যে বলেন, মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন, যা তামাকমুক্ত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে পারে। মাদক ও তামাকমুক্ত দেশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মানস এর সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান তালুকদার, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর প্রমুখ। প্রোগ্রামটি সঞ্চালনা করেন মানসের সিনিয়র প্রজেক্ট ও কমিউনিকেশন অফিসার মো. আবু রায়হান।

সভায় চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, এইড ফাউন্ডেশন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, নাটাব এর প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।