ঢাকাশনিবার , ৩০ মার্চ ২০২৪

পরামর্শমূলক সভায় বক্তারা

মোড়কজাত খাবারে ট্রাফিক লাইট মার্কিংসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ৩০, ২০২৪ ২:৫৭ অপরাহ্ণ । ৩৩২ জন

নাগরিকদের মাঝে মোড়কজাত খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে। এ সকল মোড়কজাত খাবারে লবণ, চিনি এবং ট্রান্সফ্যাটের মতো উপাদান রয়েছে। এ সব উপাদানগুলোর অপরিমিত ব্যবহার হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ। নাগরিকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে মোড়কজাত খাবারে লবণ, চিনি এবং ট্রান্সফ্যাট-র ব্যবহার কামানো হবে। আর এ লক্ষ্যে মোড়কজাত খাবারে  ট্রাফিক লাইট মার্কিংসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী জরুরি। যাতে নাগরিকরা মোড়কে মার্কিং দেখে সহজে বুঝতে পারে এতে কি পরিমান লবণ, চিনি এবং ট্রান্সফ্যাট রয়েছে। এছাড়া শিশুদের নিকট বা শিশুদের লক্ষ্য করে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের বিজ্ঞাপনের বন্ধের আইন পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

আজ শনিবার (৩০ মার্চ ২০২৪) রাজধানীর গুলশানে হোটেল বেঙ্গল ব্লুবেরীতে সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স (সিএলপিএ) আয়োজিত ‘স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিতে বিদ্যমান আইন, নীতিমালা : প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শীর্ষক পরামর্শক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. শহীদুল আলম, বিশেষ অতিথি ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক জেষ্ঠ্য সহকারী সচিব নুরুন্নবী বুলবুল। অনু্ষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএলপিএর রিসার্চ কন্সালটেন্ট অধ্যাপক ডা. আফম সারোয়ার এবং সঞ্চালনা করেন সিএলপিএর পলিসি এনালিস্ট কামরুন্নিছা মুন্না। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী, উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যমান মোড়কজাত খাদ্যের মোড়কে লিখিত পুষ্টির তথ্য দেয়া হয়। কিন্তু এসব তথ্য সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। বিদ্যমান নিরাপদ খাদ্য আইন অনুসারে মোড়কজাত খাবারে ট্রাফিক লাইট মার্কিংসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নিশ্চিত করা জরুরি। যাতে অক্ষর জ্ঞানহীন মানুষরাও মোড়কে কালার দেশে স্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আমাদের এখন খাদ্যের মোড়ক নিয়েও সর্তক হতে হবে, কেননা এখন মাইক্রোপ্লাস্টিক এখন মানুষের দেহে চলে আসছে। যা থেকে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনেক অস্বাস্থ্য খাদ্যের বিজ্ঞাপন হচ্ছে। অস্বাস্থ্য খাদ্যে শিশুদের আকৃষ্ট করতে নানা অপতৎপরতা চালাতে এসব বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। আইনের মাধ্যমে এ সকল অস্বাস্থ্য খাদ্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা জরুরি।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ ডায়বেটিসে ৭ম এবং হাইপ্রেসারে ১০ম। দ্রুত স্বাস্থ্য খাতে অসংক্রামক রোগের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমাদের হেলথ সেক্টর হুমকির মুখে পড়বে। আমরা চিকিৎসা করতে প্রচুর ব্যয় করি। চিকিৎসায় ৬০ শতাংশ ব্যয় ব্যক্তি বহন করায় তারা দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। কারণ অকারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে গ্যাস্টিকের ওষুধ গ্রহণ করে কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলছি। ফলে সরকারকে চিনি, লবণ, প্যাকেট জাতীয় খাবারে উচ্চ হারে করারোপ করে সেগুলো চিকিৎসা খাতে ব্যয় করতে হবে।

সভায় বক্তারা নিরাপদ খাদ্য অনুসারে মোড়কজাত খাবারে ট্রাফিক লাইট মার্কিংসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান, খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা, তাজা ফল ও শাকসবজি মজুত ও সংরক্ষণে নীতি গ্রহণ, শিশুদের লক্ষ্য করে অস্বাস্থ্যখাদ্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের উপর অতিরিক্ত কর এবং স্বাস্থ্যকর আরোপ করার সুপারিশ করা হয়েছে।