ইউরোপের বাজারে এবারও রফতানি হচ্ছে সাতক্ষীরার আম। ইংল্যান্ড, সুইডেন ও ইতালিতে যাচ্ছে এখানকার সুস্বাদু হিমসাগর ও গোবিন্দভোগ আম। এসব আমের পাশাপাশি এবার রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে ল্যাংড়া ও আম্রপালি আমও।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে ৩০০ মেট্রিক টন আম রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল সাতক্ষীরা সদর, কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলার ৩০০ জন চাষিকে। এবার সাতক্ষীরা থেকে এ পর্যন্ত ৫০ মেট্রিক টন আম রফতানি হয়েছে।
তবে, সাতক্ষীরায় আমের ফলন কম হওয়া, ঘূর্ণিঝড় রিমালে ঝরে পড়া ও খরার কারণে আম আকারে বড় না হওয়ায় চলতি মৌসুমে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আমের ফলন কম হয়েছে। পাশাপাশি রফতানির মান অর্জনেও ব্যর্থ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালে অনেক গাছের আমে দাগ হয়ে গেছে। এ ছাড়া এবার আম আকারেও ছোট হয়েছে। তাই রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
ঢাকার আম রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান তাসিন এন্টারপ্রাইজের সহকারী ব্যবস্থাপক হজরত আলী বলেন, ‘ইউরোপের বাজারে সাতক্ষীরার হিমসাগর আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে এবার আমের উৎপাদন ভালো না হওয়ায় রফতানিযোগ্য আম সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
সাতক্ষীরার বাকাল এলাকার আমচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ২৫ বিঘা জমিতে আমবাগান রয়েছে। কিন্তু এবার আম ভালো হয়নি। এজন্য মাত্র চার মেট্রিক টন গোবিন্দভোগ ও দুই মেট্রিক টন হিমসাগর আম বাইরে পাঠাতে পেরেছি। এবার দাম পাওয়া যাচ্ছে ভালো। গত মৌসুমে যে আম ২ হাজার ৪শ থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম, এবার তার দাম ৩ হাজার ২শ থেকে ৩ হাজার ৪শ টাকা মণ।’
আম রফতানির প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরার আম আবহাওয়া ও জলবায়ুগত কারণে বেশ আগে পাকে এবং স্বাদে ও মানে অনন্য। কিন্তু রফতানির ক্ষেত্রে প্রক্রিয়া শুরু হতে বেশ দেরি হয়ে যায়। আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে সাতক্ষীরা থেকে হাজার হাজার টন আম রফতানি করা সম্ভব। ২০১৫ সাল থেকে সাতক্ষীরার আম ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়ে আসছে।’