ঢাকাসোমবার , ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য

লবণাক্ত জমিতেও বাহারি ফসলের চাষ

তাসনিয়া মিন্নি
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩ ১১:৩১ অপরাহ্ণ । ৮১ জন

জলবায়ু পরিতনের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে মেরুঅঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।  এর সাথে যোগ হয়েছে অনাবৃষ্টি। ফলে শুষ্ক মৌসুমে নদী ও খালে লবনাক্ত পানি প্রবেশ করছে। যার ফলে ব্যাপকভাবে কৃষি এলাকার মাটি লবনাক্ত হচ্ছে।  ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন।

বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৮টি জেলার ৯৩টি উপজেলা বিভিন্ন মাত্রায় লবণাক্তে আক্রান্ত। লবণাক্ততার কারণে এই এলাকার শস্য নিবিড়তা মাত্র ১৩৩ শতাংশ। যেখানে দেশের গড় নিবিড়তা ২১৪ শতাংশ। শুকনো মৌশুমে এই এলাকার অধিকাংশ জমি পতিত থাকে।

তবে এখন এই সকল লবণাক্ত জমিতে ফসল ফলানো যাচ্ছে।  বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) দীঘদিন ধরে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে। তারা অনেকগুলো জাত উদ্ভোবনেও সফল হয়েছে। এগুলো চাষ করে কৃষকরা অনেক ফলন ও পাচ্ছে। উৎপাদিত লবণ সহিষ্ণুজাতের ধানের মধ্যে রয়েছে ব্রি–৪৭, ব্রি–৫৫, ব্রি–৬৭, বিনা–৮ ও বিনা–১০। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) বিনা–৮ ও বিনা–১০ জাতের লবণ সহিষ্ণু ধান উদ্ভাবন করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ব্রি–৪৭, ব্রি–৫৫ ও ব্রি–৬৭ জাতের লবণ সহিষ্ণু ধানের উদ্ভাবন করেছে। এসব জাতের ধানের পুষ্টি গুণও বেশি।

একারণে উপকূলীয় অঞ্চলে ক্রমশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে লবণ সহিষ্ণু বোরো আবাদ। তুলনামূলক শক্ত ও লবণাক্ত জমিতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় প্রতিবছর এ জাতের ধানের আবাদ বাড়ছে।

বোরো আবাদ বাড়ায় শীতের মাঝামাঝি সময়ে আমন ধান কাটা শেষ না হতেই চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন কৃষকরা। এছাড়া নতুন নতুন এলাকায় লবণ পানির চিংড়ি চাষের পরিবর্তে বেড়েছে লবণ সহিষ্ণু বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের চাষ। যে কারণে এ মুহূর্তে এ উপজেলার কৃষকরা বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে বোরো আবাদ চাষ ব্যয়বহুল হলেও ধানের বাজার ও (গো খাদ্য) খড়কুটার দাম বাড়ায় লাভজনক মনে করছেন কৃষকরা। ফলে এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে কৃষকদের আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় বোরো আবাদ বেড়েছে।

লবণাক্ত জমিতে শুধু ধান নয় এর পাশাপাশি গম, সরিষা বাদাম খেসারিরও চাষ করা যায়।  এক্ষেত্রে উন্নত মানের জাতগুলো হলো বিনা সরিষা-৫, বিনা সরিষা-৬, বিনা চিনাবাদাম ৫, বিনা চিনাবাদাম-৬, বারি গম-২৫, বারি মুগ -৫, বারি মুগ-৬, বারি খেসারি -১, বারি কখেসারি-২, বারি মাসকালাই -১, বারি মাসকালাই-২, বারি মাসকালাই-৩।

এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষও করা যায় যেমন চায়না-৩ লিচু, আম্রপালি আম, বাউ আমলকি-১। এছাড়া রাস্তার পাশে বনজ ও ঔষধী গাছ লাগানো যায়।