তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে বিএটি হোটেল ও রেষ্টুরেন্টে তরুণদের ধূমপানে আকৃষ্ট করতে নানাধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে। বিএটি এ কার্যক্রমের মাধ্যমে শুধু আইন লঙ্ঘন করছে না, পাশাপাশি সরকার তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা বাধাগ্রস্ত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
গতকাল দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের প্রচারিত সংবাদে দেখা গেছে, বিধিনিষেধ ও শাস্তির বিধান থাকা সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ ও হোটেলে বিভিন্ন কৌশলে প্রচারনা কার্যক্রম চালাচ্ছে বিএটি। উল্লেখ্য ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) এ লিফলেট, পোস্টার, বিলবোর্ড ও সাইনবোর্ডসহ যেকোনো উপায়ে তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই আইনে ক্রেতাদের প্রলুব্ধ করার জন্য বিনামূল্যে নমুনা বা কম টাকায় পণ্যের প্রস্তাব দেওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ৮ টি বিভাগের ৪৫টি জেলার ৯৪৪ টি স্থানের ৮০১৯ টি বিক্রয় কেন্দ্র থেকে প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার বিজ্ঞাপনের চিত্র পাওয়া গেছে, অধিকাংশ স্থানে বিএটিবি (৯৬%) আইন লঙ্ঘন করে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ঢাকার বিভিন্ন রেষ্টুরেন্ট-র স্মোকিং জোন তৈরি করে দিচ্ছে, যেখানে শুধু বিএটির ব্র্যান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। তাদের এ কার্যক্রম শুধুমাত্র কিশোর-কিশোরীদের ধূমপানে আকৃষ্ট করা অপচেষ্টা।
তামাক বিরোধী কয়েকটি সংগঠনের ‘রেস্টুরেন্টে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান: জনস্বাস্থ্য হুমকিতে’শীর্ষক অপর এর গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ঢাকায় ৪০.৭ শতাংশ রেস্টুরেন্টে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রয়েছে। এর মধ্যে ৮.৬ শতাংশ রেস্টুরেন্টে সিগারেট বিক্রি হয়। প্রতিনিয়ত তামাক কোম্পানির সহায়তায় এসব স্থান গড়ে তোলা হচ্ছে।
বিএটি-র এ ধরনের বেআইন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলা তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সগুলোতে নিয়মিত অভিযোগ প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু আইন পাশ হওয়ার ২৪ বছর পরও আইন লংঙ্ঘন করে এ ধরনের বেআইনী কার্যক্রম করার প্রেক্ষিতে এই কোম্পানির বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। রাষ্ট্রের আইন বাস্তবায়ন ও সরকারের তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে বিএটির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট জোর দাবি জানাচ্ছে।