ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৩ জুন ২০২৪
  • অন্যান্য

মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চীনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বাংলাদেশ : মৎস্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ১৩, ২০২৪ ১:০৪ অপরাহ্ণ । ১২২ জন

মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চীনকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেছেন, ভবিষ্যতে আমরা উৎপাদনে প্রথম স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করবো বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে মিঠা পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হওয়া উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন কথা বলেন।

দেশীয় প্রজাতির মাছ সন্দেহাতীতভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ জাতের মাছ বৃদ্ধির জন্য নদী-নালায় পোনা অবমুক্ত করে থাকি। কিন্তু কারেন্ট জাল গোটা বাংলাদেশকে ছড়িয়ে পড়েছে। একটা পোনা পর্যন্ত এই জাল থেকে নিষ্কৃতি পায় না। দেশে আমরা এই জাল উৎপাদন নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু জাল উৎপাদনকারীরা আদালতে গেছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, যেসব মাছ আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে গেছে, আগামীতে তা আবার খালে-বিলে দেখতে পাবেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার প্রতিবেদন অনুসারে, মিঠা পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ চীনকে টপকে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। এছাড়া বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

মন্ত্রী বলেন, ক্রাস্টাশিয়ান্স (খোলসযুক্ত মৎস্য জাতীয় প্রাণি যেমন: চিংড়ি, লবস্টার ইত্যাদি) উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম এবং সামুদ্রিক মাছ উৎপাদনে ১৪তম স্থান অধিকার করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চীনের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ছিল ১.৪৬ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে দ্বিতীয়। অপরদিকে বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১.২৫ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে তৃতীয়। বিগত দুই বছরে বাংলাদেশের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ১.২৫ মিলিয়ন টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১.৩২ মিলিয়ন টন এ উন্নীত হয়েছে।

পক্ষান্তরে চীনের উৎপাদন ১.৪৬ মিলিয়ন টন থেকে কমে ১.১৬ মিলিয়ন টন হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, বিগত দুই বছরে মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে ইলিশ, দেশীয় প্রজাতির মাছ (পাঙ্গাস, বোয়াল, আইড় ও অনান্য ছোট মাছ) এবং কার্প জাতীয় মাছ। এর মধ্যে সর্বাধিক অবদান রয়েছে ইলিশ মাছের।

‘বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম; ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে সরকার জাটকা সংরক্ষণ, ইলিশ প্রজনন সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন, ইলিশ অভয়াশ্রম ঘোষণা ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন হয়েছে ৫.৭১ লাখ মেট্রিক টন।

মৎস্যমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালে আমাদের মৎস্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ লাখ মেট্রিক টন এবং ২০৪১ সালে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লিখিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও টেকসই মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিতকল্পে সেক্টরাল এ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়নপূর্বক তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সুনীল অর্থনীতির বিকাশ সাধন ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনার নিমিত্তে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।