পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প শেষ হচ্ছে আজ রোববার (৩০ জুন)। বরাদ্দকৃত ৩২ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা থেকে চূড়ান্ত বিলে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। এরমধ্যে মূল সেতুর ১৩ হাজার ১৩৩ কোটি খরচে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৫২৬ কোটি টাকা। তবে নদী শাসনে বেশি লেগেছে প্রায় ১৭১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এদিকে প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৫ জুলাই মাওয়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (৩০ জুন) বাঙালির সক্ষমতার স্মারক পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সমাপনী। ২৩ বছর আগে ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়ায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর সরকারে ফিরে ২০০৯ সাল থেকে আবার পুরো দমে কাজ শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরের বছর ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল পদ্মার বুকে চলন্ত ফেরিতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পরবর্তীতে জাইকা, আইডিবি ও এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি হয়।
কিন্তু ২০১২ সালের ২৯ জুন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিশ্ব ব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল করে। ২৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে কাজ চলমান রাখেন এবং ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মূল পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তিনি। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ শেষে ২০২২ সালের ২৫ জুন স্বপ্ন জয়ের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন এর স্বপ্নদ্রষ্টা। এখন প্রকল্পের সফল সমাপ্তির পর ৫ জুলাই মাওয়ায় সুধী সমাবেশ আসছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই খুশি পদ্মা পাড়ের মানুষ।
যাত্রী ও চালকরা জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মাধ্যমে যাতায়াত ও বাণিজ্যসহ নানা সুবিধা পাচ্ছেন তারা।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রজব আলী বলেন, ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সফল সমাপ্তির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাঠে এসে সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রকল্পের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।’
১৩ হাজার ৬৫৯ কোটির সবশেষ বরাদ্দের বিপরীতে মূল সেতুতে খরচ হয়েছে ১৩ হাজার ১৩৩ কোটি, সাশ্রয় ৫২৬ কোটি। অ্যাপ্রোচ রোডে সাশ্রয় ১৮৫ কোটি।
আর প্রাইস কন্টিজেন্সি ও ফিজিক্যাল কন্টিজেন্সির ৫০০ কোটি করে ১০০০ কোটি টাকার পুরোটাই সাশ্রয় হয়েছে। তবে নদী শাসনে বরাদ্দের বেশি ১৭১ কোটি ২৭ লাখ টাকা বেশি খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ৯৯০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ক্লেইম ছিল। সেগুলো আমরা দীর্ঘ সময় নেগোশিয়েট করেছি। আমাদের এক্সপার্ট ছিল নিউজিল্যান্ড ও মালয়েশিয়ান। তাদের এক্সপার্ট ছিল আমেরিকান ও ব্রিটিশ। তারা দীর্ঘ আলোচনা করেছে।’
২০২২ সালের ২৬ জুন থেকে চালু হওয়া পদ্মা সেতুর রাজস্ব আদায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই করছে।