ঢাকারবিবার , ১৪ জুলাই ২০২৪
  • অন্যান্য

কমেনি ঝাঁঝ, কাঁচা মরিচের কেজি এখন ৪০০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ১৪, ২০২৪ ২:৩৩ অপরাহ্ণ । ৯৯ জন

কোনো ভাবেই কমছে না কাঁচা মরিচের ঝাঁঝ। কয়েকদিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে ৪০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এদিকে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন বিক্রেতারা। রবিবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, বাজারে আমদানি করা ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি। আর দেশি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকা। অবশ্য পাড়া-মহল্লায় এর চেয়ে বেশি দামেও কাঁচা মরিচ বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারতীয় কাঁচা মরিচ আকারে দেশি মরিচের তুলনায় কিছুটা বড়।

রাজধানীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, মরিচের উৎপাদনস্থলেই দাম বেশি। যেমন দেশের কাঁচা মরিচের অন্যতম উৎপাদন এলাকা বলে পরিচিত পাবনার সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার বিভিন্ন খুচরা বাজারে ৩৬০ টাকা কেজি স্থানীয় (দেশি) কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ভারত থেকে যে কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে, তার দামও বেশি। এসব কারণে বাজারে মরিচের দাম ক্রমে বাড়ছে।

মরিচ চাষিরা বলছেন, চলতি বছর মরিচ আবাদের শুরুর দিকে অর্থাৎ এপ্রিল, মে ও জুন মাসে প্রচণ্ড খরা ও গরমে মরিচগাছগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ফলন কমেছে। অন্যদিকে বর্তমানে ভারী বর্ষণের কারণে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কাঁচা পণ্যের সরবরাহ কমেছে। এছাড়া বৃষ্টির পানিতে মরিচ গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি মধ্যে গাছ থেকে মরিচ তোলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চাহিদা অনুয়ায়ি বাজারে মরিচ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বছর কোরবানি ঈদের মাসখানেক আগে থেকেই মরিচের দাম বাড়তে শুরু করে। প্রায় ১৫ দিন ধরে বেড়েই চলেছে পণ্যটির দাম। গত বছর এসময় মরিচের দাম বেড়ে ৭০০টাকায় দাঁড়িয়েছিল। ওই সময় দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেয়।

সবজি ও কাঁচা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক কারণকে দায়ী করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম। গতকাল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ভারী বর্ষণের কারণে দেশের ১৮টি জেলায় পানি বেড়েছে। এতে ওই এলাকাগুলো থেকে কাঁচা পণ্যের সরবরাহ কমেছে। ফলে পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে অসাধু কারও ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে হয় না। আমি মনে করি এ পরিস্থিতি সাময়িক। তবে বাজারে আমাদের নজরদারি থাকবে। কারসাজির কোনো অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যদিও মাছ, মাংস, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, ভোজ্যতেল, চিনি, আটাসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম অনেক দিন ধরেই চড়া। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা, আর আলুর কেজি ৬০-৬৫ টাকা। বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম কমলেও দেশে সেভাবে কমছে না। মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে একদিকে পণ্যের আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে আমদানি পণ্যের ওপর করভারও বেড়ে যাচ্ছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ছে, চাপে পড়ছে মানুষ।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপের কথা বললেও বাজারে তার প্রভাব তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। মূল্যস্ফীতি থাকছে ১০ শতাংশেই কাছাকাছিই। এর মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম ৩৫০-৪০০ টাকা হয়ে সংসারের খরচ আরও বাড়িয়েছে।

জানতে চাইলে বেসরকারি চাকরিজীবী বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘কাঁচা মরিচ কেনা না হয় আপাতত বাদ দিলাম, ডিমের বিকল্প কী? সবকিছুর দামই তো চড়া! স্বল্প আয়ের মানুষ খুব সংকটে আছে।’