ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৯ জুন ২০২৩

আদিবাসীদের জীবনে জলবায়ুর প্রভাব সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরিতে EJN’s এর অনুদান 

পাবলিকহেলথ ডেস্ক:
জুন ২৯, ২০২৩ ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ । ৪৩০ জন

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক আদিবাসী এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের আবাসস্থল। যারা নিজেদের উপজাতি, পাহাড়ী উপজাতি, বনবাসী, তফসিলি উপজাতি,ওরাং আসলি এবং আদিবাসীসহ বিভিন্ন নামে আত্ম-পরিচয় দেয়।

যারা বিশ্বের সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যে ভরার বন ও পরিবেশযুক্ত অঞ্চলের রক্ষকারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করে।  প্রকৃতপক্ষে, আদিবাসীরা তাদের ভূমি এবং সম্পদের সাথে সম্পর্ক তাদের সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিচয়ের মূলের সাথে ওতোপ্রোতোভাবে গড়ে ওঠে। যা আদিবাসী জনগণের রাষ্ট্র সম্পর্কিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে স্বীকৃতি প্রাপ্ত।

কিন্তু বর্তমানে আদিবাসী জনগণ এবং জাতিগত সংখ্যালঘুরা পরিবেশগত বৈরি আচারণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নেতিবাচক প্রভাবের সম্মুখীন। এশিয়া প্যাসিফিক জুড়ে, অন্যান্য অঞ্চলের মতো, তাদের অধিকার এবং অঞ্চলগুলি চরম হুমকির মধ্যে রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বনের গাছ কাটার পরিমান সহনীয় মাত্রার চেয়ে ১৯ গুণেরও বেশি।, সলোমন দ্বীপে বন ধ্বংস করে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যাটারির জন্য নিকেল এবং কোবাল্ট খনি খননের প্রতিযোগিতায় চরম মূল্য দিতে হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার আদিবাসী ও উপজাতি জনগোষ্ঠীরা। অন্যান্য দেশেও সংরক্ষণের নামে আদিবাসী এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘন করার ঘটনা ঘটছে। যেমন জাতীয় উদ্যান তৈরির জন্য বনবাসীদের তাদের পূর্বপুরুষের জমি থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে।

তারপরও আদিবাসী ও উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ধারায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত  নেতিবাচক প্রভাব ও সমস্যাগুলি তুলে ধরতে গণমাধ্যমগুলো খুব একটা আগ্রহী হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই এসব বিষয় অনুপস্থিত থাকে প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোতে। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামের প্রতিবেদনে দেখা যায়,ভারতের ডিজিটাল মিডিয়ায় ৫ শতাংশের কম সংবাদ তৈরি হয়েছে তফসিলি জাতি-উপজাতিদের নিয়ে। গণমাধ্যমে আদিবাসী-উপজাতীদের জীবন ও সংকট নিয়ে খুব কম সংবাদ থাকায় বিশ্বজুড়েই আদিবাসী সম্প্রদায় এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে গৎবাঁধা ধারনা এবং ভুল তথ্য পরিবেশনই স্থায়ী হয়ে উঠে।

ফেলোশীপ ঘোষণা EJN’s এর:

এই সমস্যাটি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংস্থা সিডা-এর সহায়তায়, EJN’s এশিয়া-প্যাসিফিক প্রকল্পের আওতায়, নির্বাচিত সাংবাদিকদেরকে আনুমানিক ২০-২৫ প্রতিবেদন তৈরিতে অনুদান প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে।

নির্বাচিত প্রতিবেদনগুলোর মাধ্যমে আদিবাসী বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলিকে প্রভাবিত করে এমন মূল পরিবেশগত এবং জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করবে। যেখানে আদিবাসীদের ঐতিহ্য ও প্রথাগত জ্ঞান ব্যবস্থা এবং নিজস্ব ভূমি ব্যবহার পদ্ধতিগুলো তুলে ধরে সংকটগুলো মোকাবেলা করে তা তুলে ধরতে হবে। আর্থিক সহায়তা ছাড়াও নির্বাচিত সাংবাদিকদের প্রতিবেদন তৈরিতে পরিবেশ ও জলবায়ু সংক্রান্ত অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা মেন্টরশীপ সুবিধাও দেয়া হবে বলে জানিয়েছে EJN’s।

আবেদনের শেষ তারিখ:

আবেদনের শেষ তারিখ: জলবায়ু ও পরিবেশগত প্রতিবেদন তৈরির যে কোনো প্রস্তাবকেই স্বাগত জানায় আর্থজার্নালিজম.নেট। তবে এক্ষেত্রে তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে প্রতিবেদন প্রস্তাব চেয়েছে সংস্থাটি।

এক. কীভাবে পরিবেশগত ও জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলি আদিবাসী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষুন্ন করে ও প্রভাবিত করে।

দুই. বিভিন্ন ধরনের পার্কসহ বনাঞ্চল সংরক্ষণের মাধ্যমে আদিবাসী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ ও জীবন ধারাকে ব্যহত করে এবং

তিন. আদিবাসী ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ঐতিহ্যগত জ্ঞান ও ধারণার ব্যবহার বাড়িয়ে স্বাস্থ্য,জীববৈচিত্র্য এবং জলবায়ুর বৈশ্বিক সমস্যাগুলো নিরসন করা যায়।

প্রতিবেদন ফেলোশীপ সংক্রান্ত বিস্তারিত নিচের লিংকে; https://earthjournalism.net/opportunities/story-grants-to-support-indigenous-or-ethnic-minority-journalists-to-carry-out

আবেদনের শেষ তারিখ : ৩ জুলাই ২০২২৩, সময় ১২.৫৯ পিএম, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল

আবেদন করার যোগ্যতা:  আবেদনকারীদের অবশ্যই আদিবাসী এবং অথবা কোনো একটি জাতিগত সংখ্যালঘু হিসাবে স্ব-পরিচয় দিতে হবে এবং আবেদনে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।তবে আদিবাসী এবং অ-আদিবাসী সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত গ্রুপ থেকে আবেদন করার সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে আদিবাসী সাংবাদিককে প্রধান আবেদনকারী হতে হবে। লিড আবেদনকারীরা EJN এর সাথে যোগাযোগ করার জন্য এবং পুরস্কৃত হলে গ্রুপের পক্ষ থেকে তহবিল গ্রহণের জন্য দায়ী থাকবে বলে জানানো হয়।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে বসবাসকারী সাংবাদিকদের কাছ থেকে আবেদন করতে পারবে। তবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মধ্য এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।