দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা আসিয়ানের সেক্টরাল অংশীদার হতে মালয়েশিয়ার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। কেননা আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে আসিয়ানের সভাপতিত্ব করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া। আগামী বছর মালয়েশিয়া চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলে ১০টি দেশের বিবেচনার জন্য ঢাকার আবেদন ভালো অবস্থানে থাকবে বলে জানান মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ার জাতীয় বার্তা সংস্থা বারনামা টেলিভিশনের ‘দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানান।
হাইকমিশনার বলেন, ‘দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থায় (সার্ক) বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আসিয়ানের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা আসিয়ানের সেক্টরাল সংলাপ অংশীদার হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কারণ বর্তমানে সংলাপ অংশীদার হওয়ার ওপর একটি স্থগিতাদেশ থাকলেও সংলাপ খাতের অংশীদার হওয়ার পথ খোলা আছে। এখন বাংলাদেশকে খাতভিত্তিক সংলাপের অংশীদার হতে দিতে তাদের (আসিয়ান) ঐকমত্য প্রয়োজন।’
উল্লেখ্য, সেক্টরাল সংলাপ অংশীদারদের মর্যাদা উভয় পক্ষকে জড়িত করে অনেক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ উন্মুক্ত করবে। আসিয়ানের অন্যান্য খাতভিত্তিক সংলাপ অংশীদারদের মধ্যে রয়েছে তুরস্ক, মরক্কো, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে শামীম বলেন, ‘বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধানের মাধ্যমে এটি আরও জোরদার ও সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে।’
তিনি বলেন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলতি বছরের শেষ নাগাদ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সফর সফল করতে আমরা এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছি। এরকম একটি সফর দীর্ঘ সময়ের জন্য বিলম্বিত হয়েছে এবং যখন এটি হবে, এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণতা বাড়াবে কারণ সেখানে বেশ কয়েকটি জিনিস (অর্থনৈতিক সহযোগিতা) স্বাক্ষরিত হবে যা আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
মালয়েশিয়া একটি প্রধান বাণিজ্য দেশ এবং আসিয়ানের বাণিজ্যের জন্য একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং ভারতের পরে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২২ সালে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার রফতানি ৪.২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রফতানির মূল্য ৩১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (১.৪ বিলিয়ন রিঙ্গিত)।
প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়া বাংলাদেশে অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ যেখানে প্রায় ৪০০ মালয়েশিয়ান কোম্পানি সেখানে নিবন্ধিত রয়েছে।