মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ গতকাল শনিবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর আজ রোববার থেকে যাত্রীরা উত্তরা-মতিঝিল রুটে মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারছেন। উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল চলাচলের প্রথম দিনেই বিপুলসংখ্যক যাত্রীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। কম সময়ে যাতায়াত করতে পেরে তাঁরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
যাত্রীরা জানান, অবরোধের কারণে রাস্তায় গণপরিবহন সীমিত থাকায় মেট্রোরেল হয়ে উঠেছে চলাচলের সবচেয়ে সহজ আর লোভনীয় মাধ্যম।
আজ রোববার সরেজমিনে ফার্মগেট স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, উত্তরা থেকে মতিঝিলমুখী ট্রেনে ভিড় ছিল বেশ। বেশির ভাগ যাত্রী ছিলেন অফিসগামী। আবার মতিঝিল থেকে যাদের মিরপুরের দিকে অফিস তাঁরাও সুবিধা নিয়েছেন মেট্রোরেলের। ২১ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগছে মাত্র ৩১ মিনিট।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় মতিঝিল থেকে আগারগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় প্রথম ট্রেন। সকাল ৭টা থেকেই ট্রেনে উঠতে যাত্রীদের লম্বা লাইনে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। উত্তরা থেকে মতিঝিলের ভাড়া ধরা হয়েছে ১০০ টাকা।
গত কয়েক বছরে ঢাকা প্রসারিত হয়েছে দুই দিকেই। দূরত্ব বেড়েছে আর সেই সঙ্গে বেড়েছে যানজট। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার একজন যাত্রী দুই ঘণ্টার মধ্যে ৪৬ মিনিট যানজটে সময় পার করেন। ফলে এই মেট্রোযাত্রা স্বস্তির সম্ভাবনা জানান দিচ্ছে। বিশেষ করে যারা উত্তরা থেকে মতিঝিলে যাতায়াত করে থাকেন।
তবে সময় নিয়ে আক্ষেপ করেছেন মতিঝিলগামী যাত্রীরা। উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলাচলের সময় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলবে ৪ ঘণ্টা
মেট্রোরেল শুরুতে উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলবে ৪ ঘণ্টা। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলাচল করবে। তবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত অংশে চলাচল করবে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।
ধীরে ধীরে উত্তরা-মতিঝিল রুটেও সময় বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।
ঢাকার উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রথম মেট্রোরেল যেটা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত। এই প্রকল্প সরকার হাতে নেয় ২০১২ সালে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত বর্ধিতাংশ চালু হতে পারে ২০২৫ সালে। এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের সর্বমোট ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী জাইকার অর্থায়ন ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা এবং সরকারি অর্থায়ন ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।