ঢাকাসোমবার , ১১ নভেম্বর ২০২৪

এবার আমরা চায়ের উৎপাদন টার্গেটে যেতে পারবো না : চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ১১, ২০২৪ ২:৫৮ অপরাহ্ণ । ১৪ জন

এবার আমরা উৎপাদন টার্গেটে যেতে পারবো না। কোয়ালিটিতে উত্তরবঙ্গের চা-বাগানগুলোকে যদি আমরা আমলে নেই, তাহলে হয়তো লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। কিন্তু কোয়ালিটি বিবেচনায় সেটা সম্ভব হবে না। তবে যতটুকু জেনেছি, অক্টোবর পর্যন্ত বেশির ভাগ চা বাগান গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ চা বোর্ডের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন।

রবিবার (১০ নভেম্বর) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা বোর্ড প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের আয়োজনে কনফারেন্স রুমে চতুর্থবারের মতো পাঁচ দিনব্যাপী ‘টি টেস্টিং অ্যান্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল’ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ চা বোর্ড প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. একে এম রফিকুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- যুগ্ম-সচিব ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের (গবেষণা ও উন্নয়ন) সদস্য ইয়াছমিন পারভীন তিরবীজি, বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. ইসমাইল হোসেন, বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান ও ফিনলে চা কোম্পানির ভাড়াউড়া ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক জি এম শিবলী।

চায়ের দাম না পাওয়ার বিষয়ে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রাইসের চেয়ে কোয়ালিটির চ্যালেঞ্জটা বেশি। কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ করার জন্য প্রাইসটা ধরে রাখতে পারছে না। চায়ের কোয়ালিটি ইমপ্রুভ করতে পারলে দাম অবশ্যই পাওয়া যাবে। কিন্তু এখন যেহেতু কোয়ালিটি ইমপ্রুভ হচ্ছে না, তাই প্রাইস পড়ে যাচ্ছে। লোকজন ভালো চায়ের সঙ্গে খারাপ চা মিশ্রণ করে বাজারে সেল করছে। যার কারণে প্রাইসটা ফল করছে। মানুষ যখন বেশি টাকা দিয়ে একটা জিনিস কিনতে যাবে তখন ভালোটাই কিনবে। তাই ভালো চা করতে পারলে দাম অবশ্যই পাওয়া যাবে। এ ছাড়া যদি প্রশাসনিক কোনও চ্যালেঞ্জ থাকে আমরা সবাই মিলে সেটা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করবো।’

ন্যাশনাল টি কোম্পানির বাগানে উৎপাদন বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই চা বাগান (এনটিসি) সরাসরি টি বোর্ডের অধীনে নেই। কীভাবে এই রুগ্নদশা থেকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনা যায় এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়-এনটিসি আলাদা মিটিং করছে । আমরাও এটাতে ইনভলভ হচ্ছি। সবাই মিলেই চেষ্টা করছি, যাতে এনটিসির যে কারেন্ট চ্যালেঞ্জ সেটা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। এখানে শুধু বাগানেই পাতা নষ্ট হচ্ছে সেটাই না, অনেক চা গুদামে আছে সেটাও একটা ইস্যু। অনেক শ্রমিক রয়েছে যারা কাজ করতে পারছে না এবং অনেক চা পাতা গার্ডেনে পড়ে আছে সেগুলো উৎপাদন করতে পারছে না। সব লেভেল থেকেই চেষ্টা করা হচ্ছে উত্তরণের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে একজন এমডি, একজন চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, বোর্ড অব ডাইরেক্টর চার-পাঁচ জন নিয়োগ করা হয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে। সবাই মিলেই চেষ্টা করছে। আমার বিশ্বাস স্বল্প সময়ের মধ্যেই এ সমস্যা থেকে সমাধানের দিকে যেতে পারবো।’

অবৈধ পথে নিম্নমানের চা আমদানি এবং দেশী চা বিদেশে রফতানির বিষয়ে শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, ‘টি বোর্ডের পক্ষ থেকে আমরা মনিটরিং আরও জোরদার করবো। উত্তরবঙ্গে মনিটরিং আরও বাড়বে, যাতে আমরা কোয়ালিটিটা আরও ধরে রাখতে পারি। আমরা যতই পরিকল্পনা করি না কেন যদি কোয়ালিটি চা উৎপাদন করতে না পারি তাহলে রফতানি করা সম্ভব নয়। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলছি, কোয়ালিটি চা উৎপাদনের জন্য। এজন্য ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেলে আমাদের যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি কোয়ালিটি ইমপ্রুভ করতে হবে।’