ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু খুলনার কোনো বাজারেই সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম। বাজারগুলোতে ঘোষণা দেওয়া হলেও আগের দামেই ডিম কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা দাম বেশি রাখছেন বলে অভিযোগ করছেন তারা। খুলনায় খুচরা প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১৩ টাকা। আর সরকার নির্ধারিত দর ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। প্রতিটি ডিমে ১ টাকা ৫৩ পয়সা বেশি গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে কথা হয় রহিমা বেগমের সঙ্গে। এই গৃহিণীর অভিযোগ, ডিমের বাজার গত কয়েক মাস ধরে উর্ধ্বমুখী। তিনি বলেন, মাংসের পর আমিষের চাহিদা মেটায় ডিম। কিন্তু সেই ডিমের দাম এত বেশি। তাছাড়া নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে জীবন ধারণ করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বাজার ব্যবস্থাপনার দিকে সরকারের নজর দেওয়ার তাগিদ জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
দোলখোলা ইসলামপুর মোড়ের বাসিন্দা অতুনু কর বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও ব্যবসায়ীরা মানছে না।
খুলনার বিভিন্ন বাজারে পাইকারি হিসেবে ১০০ পিস ডিম সাড়ে ১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী গ্রামের ডিম ব্যবসায়ী পারভেজ। তিনি বলেন, সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছেন সে দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। খামারিদের একটি ডিম উৎপাদন করতে সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশি পড়ছে। তাছাড়া সেখান থেকে কিনে এনে খুলনার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করছেন তারা। যুক্ত হচ্ছে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ। যা সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশি।
পারভেজ আরও জানান, লেয়ার মুরগী থেকে ডিম উৎপাদন করা হয়। অনেক মালিক ডিম উৎপাদন শেষে ফার্ম বন্ধ করে দিচ্ছেন। খাবার ও বাচ্চার দাম বেশি থাকায় অনেকেই খামার ছেড়ে দিয়ে বিকল্প ব্যবসার চিন্তা করছেন।
বটিয়াঘাটার ফার্ম মালিক নিমাই চন্দ্র বলেন, বড় বড় কোম্পানিগুলোকে সরকার বিভিন্ন সময়ে সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে কিন্তু আমাদের দেওয়া হয় না। কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে চলেছে। এভাবে বাড়তে থাকলে সরকার নির্ধারিত দরে ডিম বিক্রি করা সম্ভব নয়। আমাদের এলাকার অনেক খামারি বাচ্চার দাম বেড়ে যাওয়ায় ফার্ম বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকার কোম্পানিগুলোর দিকে নজর না দিলে এ শিল্প বন্ধ হয়ে যেতে পারে।